Tuesday, March 13, 2018

কণিকা-৩

কণিকা-৩

কণিকা-৩ 

কণিকা-৩৥ যে কবিতা লেখা হয়নি তার গদ্য ভাষ্য










সর্বান্তিক বাংলা ইউনিকোড ফন্ট ‘অহনলিপি-বাংলা১৪’বিনামূল্যে ডাউনলোড করুন নিচের লিংকে ক্লিক করে:--




কণিকা-৩



যে কবিতা লেখা হয়নি তার গদ্যভাষ্য
[গদ্য কবিতা]


২০১৮

৩০১ থেকে ---

-------------------
কণিকা -৩
৩০১ থেকে ---
-------------------




কণিকা-তিন

৩০১
১৩/০৩/২০১৮ মঙ্গল, সকাল
কণায় কণায় জ্ঞানের ফনা তুলছে, ওরে আহাম্মক কী হবে-- এসবে? নিজের কাজে মন দে রে তুই, মোরা পাশ ফিরে শুই৤
নেই কাজ তো খই ভাজ৤ সেই খই ভাজার কাজ চলছে৤ মনের মণিকোঠা থেকে যেসব কথা আসছে উঠে৤ তারে ছড়িয়ে দিলাম সবার তরে৤ জ্ঞান গম্যি আছে যাদের, হয়তো তারা মিচকি হেসে, আমার মতো বেকুবের এই বোকা কথা, মজায় পড়বে উপহাসে হেসে হেসে৤



৩০২
১৩/০৩/২০১৮ মঙ্গল, বিকেল
ওরে গিরিশ, বয়সটা কি তোর তিরিশ?
বোকার মতো লিখলে এমন 
মুখে জোর ঘসে দেব শিরিশ৤



৩০৩
১৩/০৩/২০১৮ মঙ্গল, বিকেল
ধরো, কাদায় যদি পড়ো,
কাদা তোমার লাগবে না গায়
তেমন কি আর হয়?
কাদা মেখে হদ্দ হবে  
মহা মহা বীরও৤



৩০৪
১৩/০৩/২০১৮ মঙ্গল, বিকেল
বোকার সাথে ঝগড়া করে
রাগে জরোজরো
বোকা যদি জানো তারে
তবু ঝগড়া করো?


৩০৫
১৩/০৩/২০১৮ মঙ্গল, বিকেল
জাত বলে হিন্দুদের একটা পোর্টফোলিয়োর ব্যাপার আছে৤ বিদেশে জন্মানো এক ‘বঙ্গভাষী’কে ব্যাপারটা বোঝানো গেল না, সেটা কী জিনিস? একতলা, দোতলা, তিনতলা, চারতলা হিন্দুদের মস্ত বাড়ি৤ সেখানে যার যেখানে ফ্ল্যাট, সেখানেই তাকে বাস করতে হয়৤ অন্য তলায় ওঠা মানা৤ ঠিক মানাও নয়, ওঠার সাধ্য নেই কারো৤ সিঁড়ি নেই৤ ওখানেই জন্ম, ওখানেই কর্ম, ওখানেই মৃত্যু৤ 
       হিন্দুদের ব্যাপটাইজেশন/ধর্ম গ্রহণ নেই, অন্য ধর্মে আছে৤ যেখানে ধর্মপ্রবর্তক আছে সেখানেই ব্যাপটাইজেশন৤ হিন্দু ধর্মের কোনও একক প্রবর্তক নেই৤ এটা ধর্মের চেয়ে অনেকটা একটা সংস্কৃতির মতো৤  
        তিন তলায় জন্মালে তাকে জীবনভর তিনতলীয় থাকতে হবে, উপর তলায় ওঠার পারমিশন নেই, নিচের তলায় নামার বিন্দু বাসনা নেই৤ এবড় বিচিত্র জগৎ, হিন্দু জন্মায়, হিন্দু হওয়া যায় না৤ জাত যায়, জাত আসে না৤ জাত এলে নিচতলার লোক সবাই যে উপরে উঠে বসবে! ভয় সেটাই৤ ঘুমের মাসি, ঘুমের পিসি পেলেও, কাজের মাসি কোথায় পাওয়া যাবে?


৩০৬
১৩/০৩/২০১৮ মঙ্গল, বিকেল
একতলা দোতলার ব্যাপার আছে সব ধর্মেই৤ নিজের সুবিধা বজায় রাখতে নানা কায়দা৤ অন্যের মাথায় চেপে সর্দারি করার কৌশল৤পরিবারের মধ্যেই সে সব থাকে, আর সমাজের মধ্যে থাকবে না? ধর্মও একটা গোষ্ঠী বা দলের মতো৤ সবাই দল ভারী করতে চায়৤ ভালো বা মন্দের কথা নয়৤ মানুষের স্বভাব অন্যের মাথায় চেপে বসা৤ ধর্ম আদৌ না থাকলেও এটা হবে৤ সেটা রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া, দেহের রং, সম্পদ, বা অন্য যে ভাবেই হোক, জারি থাকবে৤    




৩০৭
১৭/০৩/২০১৮শনি
আমার ছেলের নাম অবন
তার ছেলের নাম অহন
       আর মেয়ের নাম অর্ণবী

বুঝলাম, অ!



৩০৮
১৭/০৩/২০১৮শনি
আমরা জ্ঞানী, বিবেচক৤ খবর পড়ি, শুনি৤ প্রভাবিত হই৤ কিন্তু কিছু করি না৤ জ্ঞানী তো! 






৩০৯
২০/০৩/২০১৮ মঙ্গলবার
মানুষে মানুষে বিভেদ, বিচ্ছেদ কত কাল ধরে আছে, থাকবেও হয়তো আরও শত শত বছর৤ মানুষ যে মানুষ তা অনুভব করার সম্ভাবনা তাহলে নেই? হয়তো নেই, কারণ যারা উপরে উঠে বসেছে, সেটা যেভাবেই হোক, তারা তাদের অবস্থান কোনও কারণেই ছেড়ে দেবে না, তাহলে যে অন্যদের মতো আমজনতার সঙ্গে এক আসনে বসতে হবে, সেটা কি কেউ সহজে মেনে নেবে? মানাতে হলে চাই আবার  সব কিছু ফেলে দিয়ে, নতুন করে সকল কিছুর সৃষ্টি৤ সেটা হবার সম্ভাবনা প্রায় নেই৤ বরং পরমাণু বোমা ফেলে নিজেদের সহ অন্যদের বিলুপ্ত করে দেওয়া হবে৤ হায়, মানুষ যে বুদ্ধিমান প্রাণী! তার বুদ্ধি নিজেকে ধ্বংস করতেই সফলভাবে তার কাজে লাগবে৤ সে সুখ কেবলমাত্র মানুষই পেতে পারে, অন্য পশুরা তো নির্বোধ! 



৩১০
২০/০৩/২০১৮ মঙ্গলবার
এক যাত্রায় পৃথক ফল প্রকৃতির-ই বিধান৤ একই বাবা-মায়ের সন্তান কেউ ছেলে, কেউ মেয়ে৤ নইলে যে সৃষ্টিই বন্ধ হয়ে যেত৤ শুধু পুরুষ, বা শুধু নারী দিয়ে এজগৎ সংসার অচল৤ এক যাত্রায় পৃথক ফল যে তাই থাকতেই হবে৤ তোমার আজ দুঃখের দিন, কাল সেটা সুখের দিনে পালটে যেতে পারে, আজকের রাজা কাল ফকির হতে কতক্ষণ, নানা ভাবে, নানা পথের ধাঁধায় মানুষ ঘুরছে সারাক্ষণ!




৩১১
২১/০৩/২০১৮ বুধবার
আমরা সকলেই স্বার্থপর৤ স্বার্থপর যে, সেটা আমরা নিজেরাও জানিনা৤ মন্দিরে গেলে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি-- ভগবান আমার মঙ্গল করো৤ নিজেকে বাদ দিয়ে অন্যদের মঙ্গল করার কথা আমরা কখনও বলি না, ভাবিই না৤ ঈশ্বরের কাছে গেলে আমাদের মনের প্রকৃত রূপ ফুটে ওঠে৤ অধ্যাপক বলেছিলেন, যদি মনের ফটোগ্রাফ নেওয়া যায়, তবে দেখা যাবে, সেখানে কেবল আমি  আমি  আর  আমি৤



৩১২
২১/০৩/২০১৮ বুধবার
নগ্ন মানুষের দিকে কেউ তাকাবে না, ভাববে পাগল৤ তাই অর্ধ-নগ্নতাই ব্যবসায়ের কৌশল৤ বিগতরা প্রচলিত হতে কতনা কেতা করে৤ হায়, জীবনকে বিভ্রান্ত করার এদের এত উদ্যম কেন? যদি তা জীবিকা অর্জনের জন্য হয় তো একটা সহজ পথ বলি, লোকের বাড়ি বাসন মেজে জীবিকা অর্জন করা যায়৤



৩১৩
২২/০৩/২০১৮ বৃহস্পতিবার
কাকের বাসায় ডিম ফুটে ছানা হয়েছে৤ একটা বেশ ছোটো, অন্যটা একটু বড়৤ কাকের ডাক শুনে গাছের ডালের দিকে তাকালাম৤ মানুষের দৃষ্টি দেখে
মা-কাক পালিয়ে গেল৤ ছোটো ছানাটা নড়ছে তা বোঝা যাচ্ছে, কিন্তু দেখা যাচ্ছে না৤ বড় ছানাটা অন্য দিকে ফিরে অনেক ক্ষণ তার লাল মুখ হাঁ করে রইলো, শেষে মাথা নিচু করে মুখ বন্ধ করল৤ বাসার কুটোকাটায় মাথা রেখে চুপ হয়ে রইল৤ হয়তো মা-র সাড়া পেয়ে খাবার পাবার আশায় মুখ হাঁ করেছিল৤ মা চলে যাওয়াতে যখন বুঝলে যে, আর খাবার পাবার আশা নেই, তখন সে মাথা নামিয়ে চুপ হয়ে রইলো৤ এখনও সে হয়তো চোখে দেখতে পায়না৤ তাই ভরসা মা-র ডাক, পাখার ঝটপটানি শব্দ৤ জীবন সবে শুরু হয়েছে৤ জীবন, নাকি বাঁচার শাস্তির শুরু!
       দুদিন পরে দেখি...
       শাস্তির হাত থেকে একজনের মুক্তি ঘটেছে৤



৩১৪.... 



৩১৫
২৬/০৩/২০১৮ সোমবার৤
কাকের বাসায় ডিম ফুটে দুটি ছানা হয়েছিল৤ একদিন শুনি অনেক কাক 
কা-কা-কা  করে ডাকাডাকি করছে বাসাটির চারিদিকে ওড়াউড়ি করে৤ ব্যাপার কী বোঝার জন্য উঁকি দিলাম জানালা দিয়ে, কিছু দেখা যায় কিনা? দেখি মা-কাক তার বুকের মধ্যে বার বার-- বার বার তার ছানাকে আগলে ধরছে৤ একটি ছানা আগেই গেছে, এটিও না যায়৤ মনে হল হয়তো এ ছানাটিও অসুস্থ, তার আরোগ্য কামনা করে সন্তানকে সে বুকে আগলে ধরেছে, যেন এও হারিয়ে না যায়৤ আহা, সন্তান যে কী জিনিস, তা পাখিরাও কেমন করে অনুভবে করে!  হে জগদীশ্বর, মায়ের ভালোবাসায় সে রোগমুক্ত হোক, সুস্থ হোক, বেঁচে থাক মাতৃভালোবাসায়৤


৩১৬
২৬/০৩/২০১৮ সোমবার৤
নিজের মহত্ব প্রকাশের জন্য কতো সব বড় বড় কথা৤ যখন সময় এলো, দেখা গেল মহত্ব প্রকাশকারী অনুপস্থিত, সে ধারে কাছেও নেই৤ ‘গিরিশ’ বলে, আমাকে খুঁজে পেতে হলে আমার বাগাড়ম্বরে আমাকে খুঁজো, কাজের  মধ্যে নয়! 



৩১৭
২৭/০৩/২০১৮ মঙ্গলবার৤
কলম দিয়ে ক্ষুদে ক্ষুদে পিঁপড়েরা বের হয়৤ সারি দিয়ে, যখন তখন, অবিরাম৤ নির্বিরোধ নিরীহ পিঁপড়েরা নির্বাক নীরব৤ খাতার পাতায় তা গিজি গিজি অজস্র৤ এত কালি আর কাগজ নষ্ট করে পিঁপড়েরা কী করছে পাতার পর পাতায়? কিছুই না, কেবল অসীম শক্তি জোগাচ্ছে অগ্রগতিকে৤ এক-একটা পিঁপড়ে তখন অসীম শক্তিধর, পাহাড় পর্বত বাতাস আলো আঁধার সব ফুঁড়ে চলে৤ এই নিরীহ মসীরেখাগুলো আপাত নিরীহ, আর যখন প্রয়োজন, তখন তা পাহাড় ফুঁড়ে চলে, সব প্রতিরোধকে তছনছ করে অপ্রতিহত গতিতে৤ সেটাই এই পিঁপড়েদের কাজ৤ খাতার পাতায় পাতায় তারা ঘুমায়, আর যখন প্রয়োজন, তখন সব প্রতিরোধকে চুরমার করে অতিক্রম করে চলে৤ শক্তি যে তার প্রতিটি বিন্দুতে বিন্দুতে৤



৩১৮
২৭/০৩/২০১৮ মঙ্গলবার৤
যদি বিশ্বপিতা তোমার সামনে এসে দাঁড়ায় এবং বলে, তোমার ইচ্ছে মতো তুমি বর চাইতে পারো৤ তাহলে তুমি কী বর তাঁর কাছে প্রার্থনা করবে?
১৤আমাকে অমর করে দাও? ২৤আমাকে অমৃতস্বাদের খাদ্য দাও? ৩৤আমাকে বিশ্বজয়ী করো? ৪৤আমাকে সর্বশ্রষ্ঠ করো? ৫৤আমি যেন যা-খুশি করতে পারি? ৬৤আমার ইচ্ছেতে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড চলুক? ৭৤সবার জীবন আলোকময় হয়ে উঠুক?
       যদি সত্যিই বিশ্বপিতা তোমার সামনে এসে দাঁড়ায়, তবে তুমি নিজের জন্য কিছু চাইতে পারবে না৤ তোমার মনে হবে বিশ্বের মঙ্গল হোক, সবার মঙ্গল হোক৤ সবাই অমৃতময় হোক৤ তখন তুমি ক্ষুদ্র স্বার্থপর হতে পারবে না৤ ক্ষুদ্র হয়ে তুমি কী করবে? অনন্তকাল বেঁচে থেকে তুমি কী করবে? ভালো খাবার খেয়ে, অমিত শক্তি পেয়ে তুমি কী করবে? তখন তুমি নিজেই অনেক বড় হয়ে উঠবে, তুমি বিশ্বের মঙ্গলকামী হবে৤ তখন মনে হবে কেন আমি ক্ষুদ্রবুদ্ধি হব, কেন হীনচেতা হব? বিশ্বপিতার কাছে তখন তুমি সবার জন্য মঙ্গল প্রার্থনা করবে--  সবাই ভালো থাক, সুখে থাক, আনন্দে থাক; সবার জীবন আলোকময় হয়ে উঠুক৤ এর চেয়ে বড় চাওয়া আর কিছু হতে পারেনা৤



৩১৯
২৮/০৩/২০১৮ বুধবার৤ রাত
বয়স যত বাড়ে, মানুষ মনে মনে ততো তৈরি হতে থাকে৤ বছর, মাস, হপ্তা শেষে দিন, ঘণ্টায় এসে দাঁড়ায়৤ অল্প বয়সে এসব নিয়ে চিন্তা থাকে না৤ যখন হাঁটু কাঁপে, পা কাঁপে, হাত থর থর-- বুক ধড়ফড়, যতই দিন যায় ততোই চিন্তাটা পৌঁছায় ঘণ্টায়৤ তারপর একদিন সব মাপামাপি শেষ হয়৤ পরিজনেরা ভগবান আল্লা যীশুর নাম করে৤ মঙ্গল হোক৤ মঙ্গলময় সবার মঙ্গল করুন৤



৩২০
২৯/০৩/২০১৮ বৃহস্পতিবার৤ প্রভাত ১.১০মিনিট
ঈশ্বরই শেষ ভরসা৤ দুঃখের দিনে, বিপদে শোকে বিয়োগে ঈশ্বরই শেষ স্মরণীয়৤ সুখের কালে হয়তো মনে না-পড়তে পারে, দুঃখে বিপদে সে ছাড়া কে আর তরাবে? শেষ ভরসা আর কে?


৩২১
২৯/০৩/২০১৮ বৃহস্পতিবার৤ প্রভাত ১.১৫মিনিট
যার ঈশ্বর নেই, তার শেষ ভরসা কেউ নেই৤ দুঃখের দিনে পাশে এসে দাঁড়াবার কেউ নেই৤ সে বড় দুঃখী৤



৩২২
২৯/০৩/২০১৮ বৃহস্পতিবার৤ প্রভাত ৩.৩০মিনিট
জন্ম হল শোকগাথা গাইবার এক জৈবিক প্রক্রিয়া৤ বেঁচে থাকার সব শাস্তি সে ভোগ করবে, দুঃখে কষ্টে হতাশায় বিপদে অস্থির হবে৤ সেজন্যই তার জন্ম৤ যার জন্ম হয়নি, তার শোক কষ্ট দুঃখের দোরে হাজিরা নেই৤ 




৩২৩
২৯/০৩/২০১৮ বৃহস্পতিবার৤ প্রভাত ৩.৪০মিনিট
মানুষ চুপ করে থাকলেও তার মস্তিষ্ক কাজ করে চলে৤ তাই তো সে স্বপ্ন দেখে৤ চিন্তিত মানুষকে বোঝা যায় তার মুখ দেখে৤ মুখই তো মনের আয়না, সব চিন্তার ছাপ সেখানে ফুটে ওঠে৤ মাথার খুলি মগজকে ঢেকে রেখেছে চিন্তাটা যাতে সরাসরি দেখতে পাওয়া না-যায়, তবে তার বহিরাবরণের বাইরেও সে, ছাপ ফেলে, তাই চিন্তিত মানুষের মুখ দেখলে বোঝা যায়, সে চিন্তামগ্ন৤



৩২৪
২৯/০৩/২০১৮ বৃহস্পতিবার৤ প্রভাত ৩.৪৫মিনিট
মনের উপরে নির্ভর করে দেহভাব, খিদে পেলে খিদে চেপে রাখতে মনই নির্দেশ দেয়, মলত্যাগে সে নিয়ন্ত্রণ করে কখন সুযোগ আসবে তার জন্য৤ খানিকক্ষণ চেপে রাখার নির্দেশ মনই দেয়৤ মনই মানুষের নিয়ন্ত্রণকর্তা৤ মন-প্রভুর আদেশে আমাদের দেহ কাজ করে চলে৤ শিশুর সেই নিয়ন্ত্রণ নেই, তার মনকে সে ঠেকিয়ে রাখতে পারে না৤ বলতে পারে না-- প্রভু, বিছানা ভিজে যাবে যে!
       নব্বুই বছরের শিশুরও সেই একই অবস্থা৤ মন তার অধীন নয়৤
 



৩২৫
৩১/০৩/২০১৮ শনিবার
কাগজের খবর-- একজন নারী এত দুর্বল যে তিনি তাঁর শিশু সন্তানকেও কোলে তুলে নিতে পারছেন না৤ ডাক্তারি পরীক্ষা হল তাঁর, দেখা গেল হার্টে বিরাট ফুটো৤ কলকাতায় বড় চিকিৎসা কেন্দ্রে এসেও ডাক্তারি পরীক্ষায় সেই একই ফল পাওয়া গেল৤ যদি ওপেন হার্ট সার্জারি করা হয় তবে প্রায় একমাস বিছানায় শুয়ে থাকতে হবে৤ ডাক্তারেরা নতুন পদ্ধতিতে বেলুন-চিকিৎসা করলেন৤ সেরে গেলেন তিনি, পরদিনই তাঁকে ছুটি দেওয়া হল৤ মৃত্যু তাঁকে এবারে ছুঁতে পারেনি৤ ভাগ্যং ফলতি সর্বত্রম৤


৩২৬
৩১/০৩/২০১৮ শনিবার
ছবি প্রকাশিত হয়েছে কাগজে, বাঘের মুখে পড়ে এক নারীর পেটে বিরাট আঁচড়, রক্ত ঝরছে৤ একজন শিশুকে বলা হল জঙ্গলে যাবে না, দেখো বাঘ কেমন কামড়ে দিয়েছে৤ শিশুটি বলল, না আমি জঙ্গলে যাব না৤ এক কিশোরী ছিল পাশে, সে বলল, শহরে বাড়ির-জঙ্গলেও তো কত বাঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে৤ সাবধানে না থাকলে থাবা দিয়ে ছিঁড়ে রক্তাক্ত করে ছাড়বে৤ হয়তো তাই, শহরটাও তো জঙ্গলই, বাড়ির জঙ্গল৤



৩২৭
৩০/০৩/২০১০ শুক্রবার৤ রাত৤
সংগীতের সম্পদ সুধা হল-- রবীন্দ্রসংগীত৤ এ বৈভব পৃথিবীতে আর কারও নেই৤ বৈষ্ণব পদাবলীর ধারক বাংলাভাষা পেয়েছে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার৤ বাংলাভাষার বিদেশি শিক্ষক জে ডি এ্যান্ডারসন (ডি.লিট, আই সি এস, বঙ্গীয় তথা ঢাকা সাহিত্য-পরিষদের সদস্য,কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাভাষার অধ্যাপক ১৯২০-তে) বলেছেন, “সামগ্রিক বাংলা সাহিত্যের সমৃদ্ধি ও মাধুর্যের বিচারে এ এক বিলম্বিত ... স্বীকৃতি৤... মানবিকতা, কারুণ্য ও সরসতাগুণে এ-সাহিত্যের গরিমার কথা মানতেই হয়, মানতে হয় এর লক্ষণীয় বৈচিত্র, নম্য রীতিকলা এবং গদ্য-পদ্য নির্বিশেষে প্রকাশশৈলীর বহুমুখী ঐশ্বর্য ...৤ পাশ্চাত্য সাহিত্যের অনুবাদ-বাহন হিসেবেও সমস্ত ভারতীয় ভাষার মধ্যে বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠতা অবশ্যস্বীকার্য৤” আমরা ভাগ্যবান যে বাংলাভাষায় জন্মেছি৤ অহরহ রবীন্দ্রসংগীতসুধা পান করছি৤ জীবনের প্রতিটি পলে অনুভব করছি মাগো তোমার সুধামাখা কোল৤ ধন্য ভাষা বাংলা, ধন্য মোর ভাষা তোমার কোলে জন্ম লভে সার্থক হয়েছে মোর মর্তে আসা৤





৩২৮
০৫/০৪/২০১৮ বৃহস্পতিবার৤ 
ফুলের সৌরভ আর বর্ণে আকৃষ্ট হয়ে মৌমাছিরা গুনগুন করে৤ যে ফুলে সৌরভ নেই, বর্ণ নেই তার দিকে কেউ ফিরে তাকায় না৤ সুরভিত, বর্ণরঞ্জিত কিংবা বর্ণহীন সৌরভহীন ফুলের নিজের কী আর করার আছে? সে শুধু ফল ভোগ করে৤ কখনও তা উচ্ছ্বাসে, কখনও চোখের জলে৤ সুখ দুঃখ সবারই সমান, দূর থেকে তার  কিইবা বোঝা যাবে?


৩২৯
০৬/০৪/২০১৮ শুক্রবার
যে পাঁঠাটাকে খেতে ইচ্ছে করবে, অমনি তাকে দেবতার দোরে উৎসর্গ? দেবতার নামে পাঁঠা ভক্ষণ৤ জীবনে এমনি কতই-না শঠতা চলে৤  


৩৩০
০৭/০৪/২০১৮ শনিবার
নারীরা তাদের মূল্য পায় না, তারা রান্না করে খাওয়ায়, আবার খারাপ হলে নিন্দিত হয়৤ ধোঁয়া, গ্যাস, ধুলো হজম ক’রে নিত্যদিন আহারের বন্দোবস্ত করে৤ এটা যে তিলে তিলে আত্মত্যাগ, সেটা কেউই বিবেচনা করে না, মেয়েরা নিজেরা অবধি নয়৤ দধীচির হাড়ে নয়, নারীর অস্তিত্বের উপরে সংসারের কায়া জড়িয়ে৤






৩৩১
০৮/০৪/২০১৮ রবিবার
আগে সন্ধের পরে দেখা যেত তরুণেরা যাচ্ছে আর ফুক ফুক করে আলো জ্বলছে৤ বিড়ি টানতে টানতে চলেছে৤ এখনও তেমনি দেখা যায়৤ তবে ফুক ফুক আলো মোবাইলের৤



৩৩২
০৮/০৪/২০১৮ রবিবার
আজকাল দেখা যায় ছেলে বুড়ো সকলেই মালা টিপছে৤ ভক্তি বেড়েছে৤ আবার কখনও কখনও দুহাতে করেও মালা টেপে৤ মোবাইলের সুইচ দু-হাতেও টেপা যায় যে!






৩৩৩
১২/০৪/২০১২৮ বৃহস্পতিবার
সাজ হল নিজেকে প্রচ্ছন্ন করা৤ এটা এক প্রকার মুখোশ৤ আমাকে ঠিক ঠিক যেমন দেখতে তার চেয়ে ভালো দেখাবার চেষ্টা৤ গহনা, কাপড়, আংটি, দুল, নাকছাবি, আর  চকচকে পুরুষ পোষাক৤ আমি যে ধুলো মাটি মাখা, তা লোকের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা৤
       তা সাজ ভালোই৤ মানুষকে তা সুন্দর করে৤ আমরা তো সুন্দরকেই চাই৤ সাজ তাই যতই মুখোশ হোক, সাজ নিরবধি৤    শুধু নিজেকে সাজিয়ে তুলি না, অন্যকেও সাজাই৤ তাকে সুন্দর দেখতে চাই৤ “তোমায় সাজাব যতনে কুসুমে রতনে কেয়ূরে কঙ্কণে কুঙ্কুমে চন্দনে॥



 ৩৩৪
১৩/০৪/২০১২৮ শুক্রবার
সকালে দাঁত মাজার সময় মুখের কাছে হাত আনতেই মাজনের গন্ধ ছাপিয়ে একটা সুগন্ধ নাকে লাগল৤ মনে পড়ে গেল গতকাল সন্ধেরাতের কথা৤ অপেক্ষা করছিলাম বহুক্ষণ ধরে পথের পাশে, সে আসবে বলে৤ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যখন পা ব্যথা হয়ে এলো, তখন দূরে দেখি খুশির হাসিতে সে আসছে৤ কপট ক্রোধ দেখালাম দেরির জন্য, যেন কতনা রাগ করেছি৤ মনে মনে খুশি৤ চলে আসবার উপক্রম করে পা বাড়াতেই, সে খপ করে হাতের কব্জিটা ধরল-- প্লিজ, রাগ কোরোনা, বেরোনো কি সোজা ব্যাপার, কতকিছু বলে তবে না বেরোনো গেল, তাই দেরি৤ আমি কপট ক্রোধ সংবরণ করে হাসি মুখে কথা বললাম৤ তার পরে কত গল্প, কত কথা৤ সময় ফুরিয়ে গেল দ্রুত৤ বিদায় নিয়ে সে চলে গেল৤ আমি চাতক পাখির মতো তার দিকে চেয়ে রইলাম৤ এক-একটা পা যেন সে আমার বুকের উপর দিয়ে হেঁটে গেল৤
       সেই যে, সে হাত ধরে ছিল, সেই সুগন্ধ-- তার ক্রিমমাখা হাতের সুগন্ধ৤ স্মৃতি হয়ে তা এখনও লেগে রয়েছে৤ দাঁত আর মাজা হল না৤


৩৩৫
১৩/০৪/২০১২৮ শুক্রবার
ছেলেটা কালো রোগা৤ তার সাথে মিশলে ব্যাপার সহজ হবে না৤ তা জেনেও মন মানল না৤ কালোই ভালো৤ মনকে বোঝালাম কালো জগতের আলো৤ তা হোক বাড়িতে জানতে পারলে বিপদ হবে৤ সে-ও বলল, তোমাদের বাড়ির সকলে ধবধবে ফর্সা-- বাবা মা তুমি সবাই৤ কালোর কাছে এলে বিপদে পড়বে৤ তার চেয়ে তুমি ফিরে যাও৤ সে শুনল না কিছুতে৤ কী আর করা৤ দিন যায়৤ সে পাশ করে একটা খুব ভালো চাকুরি পেল৤ আর দেরি নয় তোমার বাবা মা তো তোমাকে এখুনি খাঁচা বন্দী করবে, যাও পাখি ফিরে যাও৤
       একদিন সে বলল, একটা বাড়ি ভাড়া নিয়েছি৤ কেন, কেন? বিয়ে করে সেখানে থাকব৤ তোমার বাবা মা জানে, তুমি বাড়ি ভাড়া নিয়েছ? দরকার নেই, বিয়ে করে একেবারে গিয়ে জানাবো৤ পাগল নাকি, তাঁদের স্নেহ-ভালোবাসা, বড় করে তোলার কোনও দাম নেই? তাঁদের বুক তুমি ভেঙে দেবে? ‘ঠিক আছে’ বলে সে চলে গেল, সে কতকাল৤ আর দেখা হয়নি৤


৩৩৬
১৩/০৪/২০১২৮ শুক্রবার
দিন শেষের বার্তা শোনা যায়, আজানের ধ্বনিতে, কাঁসর ঘণ্টা শঙ্খের নাদে৤ একটা দিন শেষ হল, হে ঈশ্বর তোমার করুণায় দিনটা বেঁচে ছিলাম, আগামী কালও যেন বেঁচে থাকি, বেঁচে থাকার খাদ্য পাই৤ বাসবাসের স্থান পাই, চিকিৎসার সুযোগ পাই, তোমাকে যেন মনে থাকে৤ ঈশ্বরহীন পৃথিবী ভরসাহীন৤ তুমি সাথে আছো তাই তো তোমার সদা সঙ্গ পাই৤ অনুভব করি পাশে পাশে কেউ আছে৤ সঙ্গহীন, সঙ্গীহীন মানুষ তো অসহায়৤ জল বৃষ্টি আলো বাতাস গাছপালা এই ধরণী সবই তো সঙ্গ দেয়, তোমার মতো সদা সহায়, সদা শুভ বার্তা বয়৤


৩৩৭
১৩/০৪/২০১২৮ শুক্রবার
তৃণভোজীরা সব সময়েই মাংসাশীদের ভোজ্য হয়৤ যারা তৃণ ভোজী হবে তারা মাংসাশীদের খাদ্যও হবে৤ নিরীহ তৃণভোজী হয়ে জীবন কাটায় যারা, তারা তাদের নিজদের তৈরি করছে মাংসাশীদের খাদ্য হিসেবে৤ এটাই জীবনের গতি৤ যাদের নখ আছে দাঁত আছে তারা অন্যদের ছিঁড়ে খায়, আর তৃণভোজীরা নিজেদের উৎসর্গ করে সেই নখ দাঁতওয়ালাদের কাছে৤ এর ব্যতিক্রম হবে কেমন করে, তৃণভোজীদের খেয়েই তো মাংসাশীরা বাঁচে৤ খাবার না খেয়ে কি কেউ বাঁচে?


৩৩৮
১৫/০৪/২০১৮ রবিবার৤ 
তুমি পড়ে পণ্ডিত, আমি করে অপণ্ডিত৤ তুমি কিছু কর না, তুমি আমার কাজ নিয়ে তত্ত্ব বানাও, আর আমাকে অপণ্ডিত ধার্য করো৤ তোমার বাস্তব জ্ঞান সীমিত, যা অলীক, তা নিয়ে তুমি মাথা ঘামাও, আমি বাস্তব সমস্যাকে সমাধান করি৤ তুমি যেহেতু পণ্ডিত তাই সমাজ তোমাকে মাথায় করে রাখে, আর আমাকে ছাই ফেলার কুলো বানায়৤ তোমাকে সবাই চেনে, আমার নাম কেউ জানে না৤ তা হোক, আসলে আমিই যে এর পিছনে, সেটাই বড় কথা৤ নামে কী আসে যায়, নামে কী হয়? নামে মেলে যে সোনা দানা, তা নিয়ে তুমি যাবে কোন্‌ স্বর্গ থানা!



৩৩৯
১৮/০৪/২০১৮ বুধবার৤
ঈশ্বরকে সব সময়েই স্মরণ করা যায়৤ স্থান নেই, কাল নেই৤ যখন দুঃখের কাল তখনই কি কেবল ঈশ্বরকে স্মরণ করবে, সুখের কালে আনন্দক্ষণেও ঈশ্বরকে স্মরণ কোরো৤ হে ইশ্বর আমাকে এই বিপদ থেকে রক্ষা করো শুধু নয়, হে ইশ্বর এই আনন্দ তুমি আমার জন্য আয়োজন করেছ, এজন্য তোমাকে প্রণাম৤ হে ঈশ্বর সকল সুখ, সকল দুঃখের কাণ্ডারী তুমি, তুমি সকল চেতনার ভূমি৤ হে ঈশ্বর তোমাকে প্রণাম আভূমি৤



৩৪০
১৯/০৪/২০১৮ বৃহস্পতিবার
যখন চারিদিক নীরব নিস্তব্ধ নির্জন, ফোঁটা জলের শব্দও শোনা যায়৤ সেই গভীর নির্জন নিস্তব্ধতায় তুমি ঈশ্বরের কাছাকাছি৤ তখন সকল মন দিয়ে তুমি ঈশ্বরকে ডাকো, তার কাছে জগতের সকলের জন্য মঙ্গল কামনা করো৤ তোমার মন শান্তি আর আনন্দে ভরে যাবে৤ প্রশান্ত হবে মন, জেনো ঈশ্বর তোমার সেই সে নির্জন৤




৩৪১
০৪/০৫/২০১৮ শুক্রবার
লিখে লিখে অনেক পাতাই সে ‘নষ্ট’ করেছে, সবাই বলে এসব করে কী হবে? কী যে হবে, সে নিজেও জানে না৤ খালি কাগজ আর কালি নষ্ট৤ পাতার পর পাতা লেখা জমতে জমতে জঞ্জাল হয়েছে অনেক৤ লোকে হাসে, এত বড় লেখক যে নিজে ছাড়া আর অন্য কেউ চেনে না? তবু সে লিখে চলে, না লিখে সে পারে না৤ না লিখলে, দিনটা যেন তার মনে হয় নষ্ট হল৤ নিজেকে সান্ত্বনা দেয় লোকে তো তাস পাশা জুয়া খেলে সময় নষ্ট করে, সে নাহয় কাগজে লিখে সময় নষ্ট করল৤ দিনে দিনে তার দিন যায়, জঞ্জাল বাড়ে৤ তার আশা আর পূরণ হল না৤ একদিন তার জীবন অবসান হল৤ কাগজ নষ্ট করার লোক আর রইলো না৤ বই এক-আধটা যে বের হয়নি তা নয়, কিন্তু তা সাড়া তোলে নি৤ লোকে দ্রুত ভুলে গেল তার কথা৤ একদিন হঠাৎ এক চিঠি এসে হাজির৤ কী লেখা সেখানে? দেশের শ্রেষ্ঠ কবিমান পেয়েছে সে৤ সে কী আর পেল, তার অবসিত স্মৃতি পেয়েছে সে সম্মান৤ লোকে হায় হায় করল, আহা আর কটা দিন আগে হল না!



৩৪২  
০৪/০৫/২০১৮ শুক্রবার
ঈশ্বরের কাছে তুমি কী প্রর্থনা করবে? জমি, বাড়ি জায়গা, টাকা, খ্যাতি, স্বর্গবাস৤ সে তো ‘ক্ষুদ্র তুমি’ চাও, ঈশ্বরের কাছেও কি তুমি সেই ক্ষুদ্রই থাকবে? ঈশ্বরের কাছে গিয়ে তোমার মনটা কি আকাশের মতো বিশাল হবে না? সবার মঙ্গল, সবার শুভ কামনা করবে না? যদি না করো, তবে তোমার ঈশ্বরকেও তুমি টেনে নামালে ক্ষুদ্রত্বের আসনে৤ ঈশ্বর তো অনেক বড়, অনেক বিশাল, তুমি ঈশ্বর হও৤


৩৪৩
০৪/০৫/২০১৮ শুক্রবার
লিখতে লিখতে তোমার মন যখন গলে যাবে জলের সাথে, মন যখন মিশে যাবে বাতাসের সাথে, তখন মনে করবে তুমি কিছু হয়তো লিখেছ, নয়তো কেন এ মিছে সময় ক্ষেপ৤ সবার মঙ্গল সবার শুভ যদি না হয়, তবে বৃথাই তোমার এ সাধনা, মিছে আত্মসুখ৤ সবার আনন্দ, সবার সুখ, সবার মঙ্গলের জন্য এ আত্ম-নিবেদন৤ সুখে থাক সকলে, আনন্দে থাক সকলে, সবার মঙ্গল হোক এ বারতা যখন ফুটে উঠবে তোমার লেখনীতে তখনই তোমার লেখা সার্থক৤


৩৪৪
০৪/০৫/২০১৮ শুক্রবার
সময় যে বয়ে যায়, আর কত বসে রও৤ তিলে তিলে বিন্দু বিন্দু সময় এগিয়ে চলে তাকে মর্যাদা দাও৤ সে তো আর ফিরে আসবে না তোমার দোরে৤ সময় বয়ে যায়, হে মানব, তোমার সাধনা বন্ধ কোরো না, যে তোমার দ্বারে, তাকে অভ্যর্থনা করো, তাকে উপযুক্ত সম্মান দেখাও৤ সে একবারই আসবে, আর কখনোই নয় এই মহাকাল মাঝে৤ চেয়ে দেখ সময় বয়ে যায়৤ আর নয়, আর নয় তারে হেলা, ফিরায়ো না তারে এই বেলা৤ যখন তোমার অবসর সময় হবে, তখন সে বহু বহু দূরে গেছে চলে...৤



৩৪৫
০৫/০৫/২০১৮ শনিবার
লিখি তো কত কিছু, তা আর মানে ওঠে না৤ কত চেষ্টা করি, কিন্তু সবই যে যায় পাসরি৤ মন ভরে না কোনও মতে৤ হয়তো লেখক হবার গুণ নেই, তাই ভাবে-ছন্দে মেলে না৤ বড্ডো যেন তা জোলো৤ একটা শব্দ জুতসই হল তো অন্য বেবাক অমিল৤ একটা ব্যাঙ লাফাচ্ছিল, দেওয়াল পার হবে বলে, কিন্তু সে দেওয়াল যে অনেক অনেক উঁচু, তার সাধ্যের বাইরে সে উচ্চতা৤ তবু সে লাফিয়ে চলে য-দি কোনও কালে তা পার হওয়া যায়! আমার লেখাও বিশাল উচ্চতা পার হবার ক্ষমতা রাখে না৤ তাই লাফালে কী হবে? জীবন বয়ে যাবে, পার আর হবে না৤ তবু, তবু চলুক লাফানো, যদি... ৤ এ ক্ষেতে চাষ আমার সাধ্য নয়৤ আশায় মরে এ চাষা৤ দিন রাত বিকেল বিহান কত যে গেল কাল, ঝরে রক্ত, ছেঁড়ে ছাল...



৩৪৬
১৪/০৫/২০১৮ সোমবার
‘আমরা যথা হইতে আসি, তথায় ফিরিয়া যাই৤’ কোথা হইতে আসি তা জানি না, সুতরাং কোথায় ফিরিয়া যাই তা-ও জানি না৤ অনুমান পঞ্চভূত আমাদের অস্তিত্ব গড়ে, আবার ফিরে সেই পঞ্চভূতেই মিলিয়ে যাই৤ যোগ বিয়োগ করে পঞ্চভূত সেই একই থাকে৤ সে অক্ষয় অজর অমর৤


৩৪৭
১৪/০৫/২০১৮ সোমবার
মন ভালো নেই৤ কেন নেই? জানি না৤ আসলে মন খারাপের যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা দিতে পারি না৤ কারণ আছে, অবশ্যই আছে, তবে তা যে ঠিক কী তা ব্যাখ্যা করে বোঝাতে পারব না৤ অর্থাৎ আমি ঠিক কী চাই তা-ই আমি ভালো করে বুঝি না, বোঝাতে পারি না৤ একটা চাহিদা মনের মাঝে যখন উঁকি দেয়, আর তা ঠিক মতো পূরণ না-হয়, কিংবা চারিদিকে একটা অস্থির পরিবেশ- - এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে কিন্তু ঠিক মতো কিছুই হচ্ছে না, তখন অস্থির লাগে, সেটাই মন খারাপ৤ অন্যকে যা ব্যাখ্যা করে বোঝানো যাবে না, নিজেই ভালো করে বুঝি না তো অন্যকে বোঝাবো কেমন করে৤ আর অন্যকে বোঝাতে না পারলে সমাজবাস্তবে তা অর্থহীন৤ তাই কখনও কখনও মন খারাপ লাগে৤ ভালো লাগছে না সেটা বুঝি, কেন লাগছে না, তার কারণটা বোঝাতে পারি না৤


৩৪৮
২০/০৫/২০১৮ রবিবার৤
নারী, বিধি যেন সেবার ব্যাটন দিয়েছে হাতে তারই৤ জন্মমাত্রে দেহ তার আষ্ঠে পৃষ্ঠে বাঁধা৤ কত বাধা৤ সে সব পেরিয়ে বরের দোরে গেলে সেখানে সে সেবক, গর্ভধারণ তার মৌলিক অধিকার৤ ভাগ্যিস তারা পুরুষের চেয়ে বুদ্ধিতে(এবং শক্তিতে) কম, তাই সৃষ্টি এখনও চলছে[নৃ-বিজ্ঞান মতে]৤ সন্তান জন্মের পর তার সব দায় কার? মা’র৤ তার আগেই গর্ভে তো সে নিয়ে নিয়েছে সকল দায়৤ প্রতিটি পদে প্রকৃতি যেন তাকে বেঁধে রেখেছে সেবার দোরে৤ মেজাজ হারালে কখনও, নিন্দার ঝড় বয়৤ আর পুরুষ পায় সকল সেবায়! পরের ঘর থেকে এসে নারী নিয়ে নেয় সংসারের সকল দায়, যেন সেটা তারই বাড়ি, তারই সব দায়৤ জন্মমুহূর্তে ঠিক হয়ে যায়, কেবা সেবক আর কে পাবে সেবায়? প্রকৃতি যেন ঠিক করে দেয়, কে খাবে ভাত, আর কার বাড়া ভাতে ছাই? ওরে সেসব কি ঢাকতে পারে, নতুন নতুন চমকানো গহনায়?
       হয়তো দূর ভবিষ্যতে শিশুর জন্ম হবে ‘ইনকিউবেটরে’৤ হোক তায়৤ তাতেও কি সমান সমান সেবা বোঝায়? 



৩৪৯
২৭/০৫/২০১৮ রবিবার৤
একজন মানুষের গুরুত্ব নির্ভর করে তার (১)আর্থিক ক্ষমতার উপরে, (২)তার প্রতিপত্তির উপরে, (৩)তার বিদ্যার উপরে৤ ধরি একজন মানুষ আসবেন দেখা করতে, তবে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা হবে বসার ঘর৤ কিন্তু আগন্তুক যদি অকিঞ্চিৎকর হন, তাঁর সামাজিক কোনও গুরুত্ব না থাকে, তিনি অর্থহীন হত দরিদ্র হন, তবে বসার ঘর সাজানোর কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয় না, প্রয়োজন নেই বলে৤  যদি তিনি গৃহ-বাথরুম সাফ করার লোক হন, তবে তাঁকে বৈঠকখানায় ঢুকতে দিতেই সংকোচ৤
       আমরা ‘মানুষ’কে গুরুত্ব দিই না, গুরুত্ব পায় তার সামাজিক আর আর্থিক অবস্থান৤



৩৫০
২৭/০৫/২০১৮ রবিবার৤
যে নারীর জন্ম নয়নশোভন সৌন্দর্য নিয়ে তাকে সবাই চোখে ভালোবাসে, আর অন্তরে হিংসা করে৤ অতর্কিতে সে শিকার হয় হায়নার, লুঠ হয় তার মানবিক সম্পদ৤ সৌন্দর্য তখন তার কাছে অভিশাপ৤ যদিও তখনও সে চোখের ভালোবাসায়, আর অন্তরের হিংসায় জর্জরিত হয়৤ যখন লোকে জানতে পারে তার হননের কাহিনি তখন সবাই মনে মনে সুখী হয়, গুমোর ভেঙেছে বলে৤ প্রাচীন পুথি কাব্যে আছে-- আপনা মাংসে হরিণা বৈরি৤ শিকারী হরিণ শিকার করে তার মাংসের জন্য৤  হরিণ নিজের মাংসের জন্য নিজেই নিজের শত্রু হয়৤ মাংস যত ভালো শিকারী ততোই তাকে শিকার করার জন্য ব্যগ্র৤





চলছে...
  

No comments: