১৫৩
২৪/০৭/২০১২
সোমবার, দুপুর
যারা
সক্ষম তারা কাজটা করে ফেলে, যারা অক্ষম তারা অজুহাত খোঁজে, আর যারা অপদার্থ তারা
অজুহাতও খোঁজে না, তারা কী করে আর কাজটা করবে?
১৫৪
০৭/০৮/২০১২
মঙ্গলবার, বিকেল
ভাব
নাহলে কেমন করে কাব্য হবে?
গুঁতো
দিয়ে মাথায়,
যায়
কি গড়া কাব্য কথায়?
বড়
জোর ব্যাকরণ তা হতে পারে,
তাও
কি হয়, নিত্য নতুন কথা উঠবে জেগে মন মুকুরে?
অগত্যা
তাই হত্যে দিয়ে বসে কাব্যদেবীর খাস দুয়ারে
১৫৫
০৫/০৯/২০১২
বুধবার, রাত
লেখাপড়া
জানি তাই প্রকাশ্যে ঈশ্বরভক্তি দেখানো চলে না এটা নিরক্ষর মানুষের এলাকা সেখানে
ঢুকতে সংকোচ শিক্ষার নির্যাস হল ঈশ্বরের নির্বাসন মন অভুক্ত থাক, তবু
ভক্তিমার্গে প্রবেশ রুদ্ধ
১৫৬
০৫/০৯/২০১২
বুধবার, রাত
শক্তি
যখন ছিল তখন করা হয়নি এখন অশক্ত শরীরে আফশোস হয়, কেন যে তখন করিনি থুড়ি বলে তো
আর সেখানে নতুন করে ফিরে যাওয়া যাবে না, কেবল ফিরে তাকানো যাবে মাত্র তাতে আফশোসই
বাড়বে, দুঃখ উথলে উঠবে
১৫৭
০৫/০৯/২০১২
বুধবার, রাত
পরে হবে বলে
রেখে দিলে তা রয়েই যায়, সেটা হয় আর না পরে যখন সময় হল, দেখা গেল তার আর দরকার
নেই সবাই চলে গেলে ফাঁকা মাঠে একা একা অনেক গোল দেওয়া যায়, তবে তার কোনও মূল্যই
নেই, গোল দেবার দর্শকসাক্ষ্য থাকা দরকার
১৫৮
০৮/০৯/২০১২
শনিবার, সকাল
যার
যোগ্যতা নেই তাকে দিয়ে কাজ করালে শ্রম এবং অর্থ দুটোই নষ্ট হয়, কাজটাও পণ্ড হয়
যোগ্যতা কীভাবে নির্ধারিত হবে? কাজ শিখে নিলেই তো যোগ্যতা অর্জন করা যায় যার বুদ্ধিবৃত্তি
অপূর্ণ সে কেমন করে যোগ্যতা অর্জন করবে? সুন্দর মাটির পুতুল সুন্দর হলেও অক্ষম
১৫৯
২১/১১/২০১২
বুধবার, বিকেল
হে
ঈশ্বর, হে মঙ্গলময়, তোমার করুণায় যেন সবার মঙ্গল হয় কি চাব আর তোমার কাছে, সবার
মঙ্গলই তো চাবার আছে সবার মঙ্গল হলে, আমারও মঙ্গল হবে, সবার মধ্যে তো আমিও আছি
১৬০
২৭/১১/২০১২
মঙ্গলবার, বিকেল
শিশু
যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন বাবা-মা তার দিকে নজর রাখে, মশা কামড়ালো কিনা, মাছিতে বিরক্ত
করছে কিনা? শিশুর অজ্ঞাতে অজান্তে জারি থাকে সেই নজরদারি ঈশ্বরও সবার অজান্তে আমাদের
মঙ্গলের জন্য নজরদারি করে
১৬১
০৮/১২/২০১২
শনিবার, রাত
মানুষের
একটা টারগেট থাকেই -- খাব, পড়ব, দেখব, শুনব, আড্ডা দেব, বেড়াব নিদেন নেতাগিরি করব
কোনও টারগেট ছাড়া কেবলই ভেসে বেড়াব -- এভাবে মানুষের বাঁচা কঠিন নিঃসঙ্গ মানুষ তো
বাঁচতে পারে না সশ্রম কারাদণ্ডের চেয়ে নির্জন কারাকক্ষে একাকী দণ্ডভোগ অনেক বেশি
কঠিন
১৬২
০৮/১২/২০১২
শনিবার, রাত
পেটটা
যেন ফারনেস যা কিছু তার ভিতরে দাও তখনই তা জীর্ণ হতে শুরু করে তা সুস্বাদু
খাবারই হোক বা বিস্বাদ, অমৃত হোক বা বিষ-- যা-ই সেখানে পড়ুক অমনি জীর্ণ হয়ে তার রস
দেহে পাঠায় অমৃতে দেহ গড়ে ওঠে, সুন্দর হয়, বিষে হয় নিপাত
১৬৩
২৪/০১/২০১৩
শুক্রবার, দুপুর (১২৹ তাপ)
শীতের
কল্পনায় কাতর হোয়ো না, শীত তো অবধারিত, শীত আসবেই এখন যে উষ্ণতাটুকু পাচ্ছ তা
উপভোগ করো শীত যখন আসবে তখন তার দুর্ভোগ সয়ো, এখন থেকেই অপেক্ষায় থাকতে হবে না
১৬৪
২৪/০১/২০১৩
শুক্রবার, দুপুর (১২৹ তাপ)
একদিন
খুব ভোরে ঘুম ভেঙে ছাদে গেলাম তখনও বেশ অন্ধকার, আকাশে অনেক তারা একা একা ছাদে
হেঁটে প্রভাতের নৈঃশব্দ্য উপভোগ করলাম একটু পরে আঁধার ফিকে হয়ে এলে, দেখি আকাশের
তারারা ক্রমে মুছে যাচ্ছে একটু পরে দেখি আকাশে আর তারা নেই তারারা আছে তবে দেখতে
পাচ্ছি না ঈশ্বর তো সব সময়ে প্রকাশিত নয়, তা বলে কি ঈশ্বর নেই?
১৬৫
০৮/০২/২০১৩
শুক্রবার, রাত
ভালো
রংগুলো বড় পলকা, হাতে লেগে সহজেই উঠে যায় বাঁদুরে রংগুলো কিছুতেই মুছতে চায় না,
ঘসলেও হাতে মুখে লেগে দাগ থেকে যায় কপালে সুখের লেখাগুলো টেঁকে না, উঠে যায় আর
দুর্ভাগ্যগুলো কিছুতেই ছাড়তে চায় না ঘসে ঘসে কপালের চামড়া ছিঁড়ে যায়, তবু দুর্লিপি
জ্বল জ্বল করে
১৬৬
০৮/০২/২০১৩
শুক্রবার, রাত
মরা
মশাটাকে নৈবেদ্য করে শিশু ভক্তিভরে বসে কপালে যুক্তকর ঠেকিয়ে খেলার বলটাকে পুজো
করছে শিশু যা দেখে তা-ই শেখে তাকে যা শেখানো হয় সে তা-ই
শেখে টিভি মহাগুরু যদি নব্য প্রজন্মকে দুষ্কর্মের তালিম দেয়, সে তো তেমনই তৈরি
হচ্ছে দিল্লি কাণ্ড নিয়ে মনোবেদনা কত! শুধু প্রতিকারে সদিচ্ছা নেই
১৬৭
১৩/০২/২০১৩
বুধবার, সকাল
যেকটা
দিন আর আছি কেবলই তা ওষুধ বিষুধের জোরে নিজের জোরে আর ক’দিনই বা বাঁচলাম, ওষুধেই
ঠেলে এনেছে এতটা পথ নাকি অন্য কোনও শক্তির জোরে? ডাক্তার তো কপালে হাত ঠেকায়
১৬৮
১৩/০২/২০১৩
বুধবার, সকাল
অন্যদের
সুন্দর মুখগুলো দেখে আনন্দে দিন কাটে নিজের মুখ তো আর দেখা যায় না, তা কেমন
ভাগ্যিস তা দেখা যায় না, নইলে বিষণ্ণ হয়ে থাকতে হত, নিরানন্দে জীবন কেটে যেত
ঈশ্বরকে ধন্যবাদ সবাইকে সুন্দর করে গড়ার জন্য
১৬৯
১৩/০২/২০১৩
বুধবার, সকাল
পথের
মাঝে একখানি স্বল্পমূল্যের ধাতুমুদ্রা পড়ে আছে, যেটির কোনও মূল্য এখন আর নেই,
সরকার তা বাতিল বলে ঘোষণা করেছে কেউ আর তাই সে মূল্যহীন জিনিসের দিকে ফিরেও
তাকাচ্ছে না যদি ওই ধাতুখণ্ডটি স্বর্ণ হত, তবে সবাই ঝাঁপিয়ে তা তুলে নিত, তার কত
কদর হত যার মূল্যই নেই তার দিকে কেউ ফিরেও তাকায় না জীবনের মূল্য অর্জন করতে
পারলাম না, তাই কেউ আমার দিকে তাকালই না
১৭০
১৭/০২/২০১৩
রবিবার, সকাল
লোকটা
যত অসুন্দর ততোই তার সুন্দর স্বভাব মুখটা যতই কদাকার ততোই তার মধুর বাচন “ভাই
কেমন আছ”-- শুনে খেঁকিয়ে উঠল প্রতিবেশী, ‘ঠিক করে কথা বল্ স্লা’ লোকটা বুঝল খোদা
তাকে সুন্দরভাবে কথা বলার জন্য সুন্দর মুখ দেয়নি সে কেন এত মোলায়েম মনোরমভাবে
বলবে, এটা লোকে ব্যঙ্গ বলেই ধরে
১৭১
১৭/০২/২০১৩
রবিবার, সকাল
এক
তরুণী-- তাকে এক-এক চোখ এক-এক দৃষ্টিতে দেখে তরুণ দেখে-- সে কেমন সুন্দরী, বাঘ
দেখে-- তার গায়ে কত মাংস, ডাক্তার দেখে-- তার কী রোগ থাকতে পারে? ব্যবসায়ী দেখে--
কত তার টাকা, বোদ্ধা দেখে-- তার পোষাকে রুচির কেমন প্রকাশ, উকিল দেখে-- মামলা লড়বে
কিনা? শিক্ষক দেখে-- সে লেখাপড়া জানে কিনা? নারী দেখে-- কেমন পরেছে শাড়িটা? স্বর্ণকার দেখে-- গয়নাগুলো
নকল কিনা? ভিখিরি দেখে-- ভিক্ষা পাবে কিনা? দুষ্টামিরত ছোটো ভাইটা দেখে-- মারবে না
তো? বাবা দেখে-- মেয়েটা ডাগর হয়েছে এবার বিয়ে দিতে হবে, কামুক দেখে-- ডবকা ছুঁড়ি!
আমি দেখি-- আমার মতোই এক জীব তার জীবনের খানিকটা পথ মাত্র পেরিয়ে এসেছে, আরও কত
দুঃখ কষ্টই না তাকে ভবিষ্যতে সইতে হবে
১৭২
১৭/০২/২০১৩
রবিবার, দুপুর
লোকটা
ছাদে পায়চারি করছিল ছাদটা ভাবে-- একটা ওজন ক্রমাগত এদিক থেকে ওদিকে যাচ্ছে, টবের
ফুল ভাবে-- ছিঁড়ে নেবে না তো! খাবার খোঁজে কাকটা ভাবে-- বার বার কেন তাড়া করছে?
পাশের ছাদে যুবতী ভাবে-- আমাকে দেখার জন্য কেমন ছোঁক ছোঁক করছে, পড়শি ভাবে-- বেশ
জমেছে তো দেখি কদ্দূর গড়ায়? পায়ে পিষে যাওয়া পিঁপড়েটা ভাবে-- ওঃ, যমদূত! উড়ন্ত চিল
ভাবে-- নড়াচড়া করা ওটা ইঁদুর হলে খাওয়া যেত, ঘাম ভাবে-- এবার ঝরে পড়ি অনেক তো
খেটেছে, লোকটি ভাবে-- বাঁচব অনেক দিন ঘাম ঝরিয়ে পায়চারিতে জমা চর্বি গেল ঝরে
১৭৩
০৯/০৩/২০১৩
শনিবার, সকাল
যে
করণীয় কাজ আমিই করিনি, এখন আমিই সে কাজ অন্যকে করার উপদেশ দিচ্ছি এসব অন্যকে কেবল
প্রতারণা নয়, এটা আত্মপ্রতারণা, নিজের বিবেককে বিদ্ধ করা
১৭৪
০৯/০৩/২০১৩
শনিবার, সকাল
একটা
ব্যাং নাকি উঁচু এক পাঁচিল টপকাতে চেয়েছিল সে অনেক লাফালাফি করল জীবনভর কিন্তু
শ্রমই হল, সময় গেল, ব্যাং সে পাঁচিল টপকাতে পারল না ব্যাং জানে না-- তার অসাধ্য
কাজ সে করতে চায় জীবন গেল ব্যাং ম’ল, পাঁচিল আর টপকানো হল না
১৭৫
০৩/০৪/২০১৩
বুধবার, সকাল
বাঁধে
যদি ছিদ্র হয়, তবে ছিদ্র মেরামত করে দিলে বাঁধ ঠিক হয়ে যায় বাঁধে যদি অনেক ছিদ্র
হয়, তবে তাও হয়তো মেরামত করা যাবে কিন্তু যদি সর্বত্রই ছিদ্র হয়, বাঁধ নড়বড়ে হয়ে
যায়, তবে সে বাঁধ রাখার কী উপায়? যৌবনে ঔষধ প্রয়োগে সহজে রোগ উপশম হয়, যখন বৃদ্ধ
বয়সে বাঁধের সর্বত্র ছিদ্র তখন ঔষধে আর কী হবে?
নতুন কণিকা---
১৭৬
০৩/০৩/২০১৮
শনিবার
সুন্দর
করে সেজেগুজে, শোভন রঙিন পোষাক পরে, অল্প বয়সি নারীরা নাচছিল, তাদের অপূর্ব নাচের
ভঙ্গী, হাতের ললিত বিন্যাস দেখে মনে হল, সাপেরা হাত হয়ে কিলবিল খেলছে ছোবল দেবার
জন্য, যেন তা হেলছে দুলছে
১৭৭
০৩/০৩/২০১৮
শনিবার
সভ্যতা যে
কত এগোচ্ছে, তা বোঝা যায় সিনেমা অভিনেত্রীদের পোষাক দেখে শাক দিয়ে তারা কেমন মাছ
ঢাকে দেখলাম শুধু জামার দুটো হাতা পরেছে, জামাটা আভাসে বোমার মতো নাম ফেটে গেল
আর পায় কে, টাকার স্রোত এসে সদর দিয়ে বাড়িতে ঢুকতে লাগল
১৭৮
০৩/০৩/২০১৮
শনিবার
কবি
অপূর্ব দত্ত লিখেছেন,
“মা বলল-
চুপ করো তো
ওর ফল্টটা
কিসে,
স্কুলে
কেন বেংগলিটা
পড়ায় না
ইংলিশে?”
ঠিকই তো,
কিন্তু তিনি খবর পাননি যে সরকারি টিভিতে বাংলা সংবাদটা হয় যে হিন্দিতে৻তাই বাংলার আর
দুঃখ নেই, বাংলাটা তাই শিখছে সবাই, অতি সহজেই
১৭৯
০৩/০৩/২০১৮
শনিবার
আমি যে
বাঙালি, তাই অন্য বাঙালির মতোই আমার বুদ্ধিটা বেশি যারা বুদ্ধিমন্ত তারা কি আর গায়ে
খাটে? গায়ে খাটা বুদ্ধিহীন নির্বোধের কাজ আমি এবং আমরা তেমন নির্বোধ কেন হব? তাই দিন
দিন শুঁটকি হতে থাকি, পেটে যে খাবার নেই বিড়ি খেয়ে দিন কাটে না তোমরা যা বলো ভাই,
সেই কাজেই ব্যস্ত আছি যাতে খাটনি নাই লক্ষ্মী ছাড়া কি আর এমনি! খেটেখুটে
লক্ষ্মীলাভ? সে আমার হবে না বাপ
১৮০
০৩/০৩/২০১৮
শনিবার
অকাজেই
কেটে যায় দিন আমি যে কেজো লোক চাপে তারই, কেটে যায় দিবস শর্বরী কে করেছে
মারামারি তার বিচার করি অমুক ঘোষ কী করেছে দোষ, আধার কার্ড পায়নি কে, করি তারই
তদারকি-- ছেলেটার পড়াটা দেখা হয় না, ফেল করেছে এবার-- থুড়ি, কী যে করেছে তার
ঠিকানা পাইনে ধুত্তোর ফেল তো করতেই পারে না, পাশ তো হয়েই আছে, শুধু নামটা লেখানো
দরকার তাহলে আর ফেল করে সাধ্যি কার?
১৮১
০৩/০৩/২০১৮
শনিবার
ভালো
লোকের কাছে সবাই সুবিধে নেয় তা ব্যক্তিগতভাবে বা সামাজিকভাবে কখনও প্রত্যর্পণ করেও
না ভালো লোক হয় তো বুদ্ধিহীন নয়, কিন্তু নিরীহ কপট দাপট দেখালেও অনেক কাজ হয়
সেটাও সে পারে না ভালো লোক হল-- দাম না-দেওয়া ভেলিগুড়ের মতো, খেতে মিষ্টি, দামও
মেটাতে হয় না
১৮২
০৩/০৩/২০১৮
শনিবার
পরিস্থিতি
অনুকূল করে নিতে হয়, সব কিছু তো আর এমনি এমনি অনুকূল থাকবে না জীবনটা অত সহজ নয়
সবাই সুযোগ খোঁজে, সুবিধে পেলে মাথায় চপে
বসে নিজেকে সবদিক থেকে রক্ষা করে চলতে হবে খর সূর্যের আলো চোখে পড়লে, গাছের
আড়ালে সরে যেতে হবে
১৮৩
০৩/০৩/২০১৮
শনিবার
টাকা
গুণছিলাম, অনেক টাকা, আজকের আয় আজকের বিক্রিবাটা গুছিয়ে সাজিয়ে গুণে তুলে রাখতে
ঘণ্টাখানেক গেল প্রায় উনসত্তর হাজার টাকা সিন্দুকে রেখে উঠব ভাবছি বেয়ারা এসে
বলল-- সাহেব, রাত হয়েছে, সবাই চলে গেছে কিছু খাবার এনে দিয়ে যাব? মনে হল সবাই
ঘরবাড়ি পরিবারের জন্য ব্যস্ত কিছু না বলে বসে রইলাম জীবনে টাকার খিদমত খাটাটাই
কি সব?
১৮৪
০৩/০৩/২০১৮
শনিবার
কুকুরগুলো
রাস্তায় খাবার নিয়ে কামড়া কামড়ি মারামারি করছিল খিদে বড় কঠিন জিনিস, অসহ্য অসহায়,
চরম অবস্থা মানুষও তো রাস্তায় ডাস্টবিনে খাবার খুঁজে ফেরে আচ্ছা যদি মানুষকে খেতে
না হত? তাহলে জীবনের এই দুর্দশা হত না
খেতে না
হলে, খিদের কষ্ট না থাকলে, মানুষ অঢেল সময় পেত, আর সেই উদ্বৃত্ত সময় ব্যয় হত তার
কামড়া কামড়ি করতে খিদের কষ্টের চেয়ে জীবন আরও অনেক বেশি দুর্বিসহ হত বেঁচে থাকাটাই
অভিশাপ হয়ে উঠত জঠর-যন্ত্রণা আছে বলে মানুষ হয়তো বেশি ভালো বাঁচে
১৮৫
০৩/০৩/২০১৮
শনিবার
ভূতকে ভয়
করি না ভূত বলে কিছু তো নেই ভয়টা আছে অবচেতন মনে তার অবস্থান তাই অন্ধকারে ভয়,
নির্জনে ভয়, গোটা বাড়িতে একা থাকার ভয় ভয়টা অনিশ্চয়তার জন্য বাঘ সাপ অজুহাত
মানুষ সঙ্গ চায় এজন্যই একক কারাবাস কঠিন শাস্তি
১৮৬
০৩/০৩/২০১৮
শনিবার
মানুষের
পেটে জন্মালেই মানুষ হয় না মানুষ হওয়া বড় কঠিন কেউ হিন্দু, কেউ মুসলমান, বৌদ্ধ,
খ্রিস্টান সবাই নিজের নিজের দলের লোক যে-মানব শিশুটি জন্মালো সে ক্রমে দলভুক্ত
হয় একে অন্যকে চেনে না, মানুষ কোথায়?
১৮৭
১০/০৩/২০১৮
শনিবার, বিকেল
শহুরে
মানুষের সমস্যা-- খেয়ে মোটা হয়, আর জিমে গিয়ে, বা যোগায়(বলে ইয়োগা) গিয়ে রোগা হয়
মাঝখান থেকে কত খাদ্য যে চর্বি হয়ে ঝরে যায়!
১৮৮
১২/০৩/২০১৮
সোমবার, সকাল
ধোঁয়া
উড়ছিল তাদের শুধোলাম, তোমারা কে? কোথায় যাও? জবাব এলো, “আমরা যথা হইতে আসি, তথায়
ফিরিয়া যাই” দেখলাম দূরে এক অগ্নি পিণ্ডের চারিদিক ঘিরে কয়েকজন লোক জড়ো হয়ে
তাঁদের কেউ কাঁদছে, কেউ হতাশ হয়ে, যে দিকে ধোঁয়া উড়ে যাচ্ছিল, সেই আকাশের দিকে
তাকিয়ে
১৮৯
১২/০৩/২০১৮
সোমবার, সকাল
অন্যেরা
অপারগ, অপদার্থ আমার চেয়ে গুণবান কে আছে? আমার মতো কাজটা এত ভালো আর কেউ পারে না
পারলেও সেটা আমার চেয়ে খারাপ করে আমি নইলে, এ জগৎটা চলত কেমন করে? (তুমি ম’লে এ
জগৎটার কী হবে রে ভাই!)
১৯০
১৩/০৩/২০১৮
মঙ্গলবার
তেল নুনের
জোগাড়ই মানব জীবনের শেষ কথা নয় এ সমুদ্রে অনেক রত্নরাজি আছে তা ডুব দিয়ে খুঁজে
বের করতে হয় সে কাজ শিক্ষা, সংস্কৃতি, রুচি ইত্যাদির সঙ্গে জড়িত তাই চাই শিক্ষা,
যা জীবনকে উন্নত করে উচ্চে তুলে ধরবে
১৯১
১৩/০৩/২০১৮
মঙ্গলবার
চারিদিকে
এত কলরোল, সবাই নিজেকে জাহির করতে ব্যস্ত আমি আমার কথা বলতে যেতেই আর একজন তার
কথা বলতে শুরু করল, সে শুরু করতেই অন্য আর একজন তার কাহিনি বিস্তারে ব্যস্ত হল,
তার মাঝেই আর একজন তার কথা বলে যাচ্ছে কেউ কারও কথা শুনছে না শোনার ইচ্ছে নেই,
শোনানোর ইচ্ছে প্রবল সবাই তো আমার মতো নিজেকে জাহির করতে ব্যস্ত, শুনবে কে?
১৯২
১৩/০৩/২০১৮
মঙ্গলবার
নারী হল
জগতের ভিত, তাদের দাবিয়ে রাখলে ভিতটাই তৈরি হয় না চাই উন্নত নারী শিক্ষা, রুচি,
মানবগর্ব নারীমুক্তি মানে নারীর ক্রয়-বিলাস ব্যাপ্তি নয় নারীশক্তি জীবনকে উন্নত,
মুক্ত, গর্বিত করবে পরিবারের চালন নারীই করে, পুরুষ তার সুরক্ষা দেয়
১৯৩
১৩/০৩/২০১৮
মঙ্গলবার
সমাজকে
উন্নত কর্মশীল করতে হলে চাই উপযুক্ত নারীশিক্ষা নারীই পরিবারকে টেনে তোলে, এগিয়ে
নিয়ে যায়, জ্ঞান সমৃদ্ধ করে নারীকে আটকে রাখলে জীবনই তো খাঁচাবন্দী, তার
বাড়বৃদ্ধি হবে কেমন করে
১৯৪
১৩/০৩/২০১৮
মঙ্গলবার
সুদর্শন
কিনা তার উপরে মানবতা নির্ভর করে না যে সুন্দর, সে তো উদ্ব্যস্ত থাকে নানা
স্তুতিতে, তার মানবতা প্রকাশের সুযোগ কই? যে অসুন্দর তার জীবন নিয়ে এত শুচি-প্রয়াস
নেই, অথবা নেই এত অহেতুক জীবনের ভয় সে-ই মানুষের পরম সহায়ক তারাই ধরণীর ধাত্রী, ধাতা
মুখখানি দেখতে সুন্দর নয়, কেবলমাত্র সে কারণে তারা মানবিক মূল্য পায় না
১৯৫
১৩/০৩/২০১৮
মঙ্গলবার
অসুস্থ
হলে মানুষ অসহায় পরনির্ভরশীল হয়ে পড়ে, অন্যের দয়া তখন তার অবলম্বন সেই মানুষই যখন
সুস্থ সবল ছিল তখন তার কী দাপট! অবস্থার হেরফেরে দুর্দশা হতে পারে, সেটা কে মনে
রাখে?
১৯৬
১৩/০৩/২০১৮
মঙ্গলবার
নির্জনতা
মানুষকে আনন্দ দেয় তা সাময়িক সঙ্গ না পেলে মানুষ বেঁচে থাকার আনন্দ পায় না সেই
সঙ্গ যখন ক্রমে শব্দ, আলো, ধুলোয় কলুষিত হয়, তখন আবার মানুষ আনন্দহীন হয়ে পড়ে যতই
সীমা পার, ততোই তা দুঃখ আনে তার
১৯৭
১৩/০৩/২০১৮
মঙ্গলবার
মানুষ যে
হারে বাড়ছে, তা রোধ না করলে মশাকেও ছাপিয়ে যাবে মশা বাড়লে কীট নাশক দিয়ে তার নাশ
হয় মানুষ নাশ হবে নিজের দোষে
১৯৮
১৩/০৩/২০১৮
মঙ্গলবার
গত শতকের
শুরুতে মানুষ ছিল যা, শতক পেরিয়ে তা ছাপিয়ে গেছে সীমারেখাকে সীমা না মানলে
প্রকৃতি নিজহাতে তা নিষ্করুণভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে মহামারীতে সাফ হয়ে যাবে অর্ধেক পৃথিবী
১৯৯
১৩/০৩/২০১৮
মঙ্গলবার
মানুষ বড়ই
বুদ্ধিমান প্রাণী আত্মরক্ষার জন্য সে কামান, বন্দুক বানিয়েছে, বাঘ হাতি সাপ আর
মানুষকে কিছু করতে পারবে না এমনকী ‘মানুষও’ যাতে কিছু করতে না পারে তার জন্য সে
বানিয়েছে পরমাণু বোমা একবার ছুঁড়লে পৃথিবী উলটে গিয়ে সব মানুষ ঠাণ্ডা
২০০
১৩/০৩/২০১৮
মঙ্গলবার
বিজ্ঞানী
হকিং বলেছেন মানুষকে অন্য গ্রহে যেতে হবে পৃথিবীর অন্তিম দিনের ঘণ্টাধ্বনি যে
শুনেছে, সাবধান করছে সে বারে বারে নির্বোধেরা অট্টরবে হাস্য করে
-- ০০ --
পরবর্তী কণিকা-৩
লিংক:
2 comments:
This blog help me very Much. Thanks again.
Go Ahead, we are always with You. and Share More & More Updates Like This.
লিংক: https://sites.google.com/site/ahanlipi/font-download/AhanLipi-Bangla14.zip
মনোজকুমার দ. গিরিশ
মণীশ পার্ক, কোলকাতা
০৩/০৩/২০১৮