Friday, July 2, 2010

দশমিক পদ্ধতির দিন সপ্তাহ






সবটা ঠিক ঠিক পড়তে হলে সংগে দেওয়া লিংক থেকে ফন্ট ফ্রি ডাউনলোড করে নিতে হবে৤ ইউনিকোড ফন্ট ডাউনলোড করার লিংক:


https://sites.google.com/site/ahanlipi/font-download/AhanLipi-Bangla14.zip


ইউনিকোড ফন্ট ডাউনলোড করার লিংক উপরে দেওয়া হল৤
লিংকে ক্লিক করুন ফন্ট ডাউনলোড হবে৤
যুক্তবর্ণ সরল গঠনের
বুঝতে লিখতে পড়তে সহজ৤


দশমিক পদ্ধতির

দিন, সপ্তাহ

মনোজকুমার দ. গিরিশ৤

সংখ্যা গণনার সময়ে আমরা দশমিক পদ্ধতি ব্যবহার করি৤ এটাই সব চেয়ে সুবিধাজনক৤ প্রাচীন দিনে অবশ্য সকল সভ্যতায় সংখ্যা গণনার কালে দশমিক পদ্ধতি ব্যবহৃত হত না৤ আধুনিক এই বিজ্ঞানের যুগে দশমিক পদ্ধতি সবচেয়ে সুবিধাজনক বলে বোঝা যাচ্ছে৤ দশমিক পদ্ধতির এই সুবিধার জন্য ১৯৫৭ সাল থেকে ভারতে ওজন ও পরিমাপ এবং মুদ্রার ক্ষেত্রে দশমিক প্রথা চালু হয়েছে৤ পরে পরিবর্তন আনা হয়েছে তাপ পরিমাপের ক্ষেত্রেও, আগে চালু ছিল ফারেনহাইট, এখন চলছে সেন্টিগ্রেড তথা সেলসিয়াস৤যদিও উন্নত অনেক দেশে এখনও এই সব প্রথা চালু করা যায়নি, কারণ তা চালু করতে অনেক ব্যয় করতে হবে, অভ্যাসের বিশাল পরিবর্তন করতে হবে৤ কিন্তু যদি সর্বত্র দশমিক পদ্ধতি চালু করা যায় তবে তা ব্যবহারিক সুবিধা এনে দেবে অনেক৤

আমাদের এখন ভাবতে হবে যে, দিন এবং সপ্তাহ গণনার ক্ষেত্রে দশমিক পদ্ধতি চালু করা যায় কীনা? দিন ২৪ ঘন্টায় না হয়ে হবে ২০ ঘন্টায়, আর সপ্তাহ হবে ১০ দিনে৤ এতে দিনের সময় গণনা বর্তমান সময় পরিমাপের বেশ কাছাকাছি থাকবে৤ আর সপ্তাহের ক্ষেত্রেও তা খুব বিচ্যুত হবে না৤ মাস গণনার ক্ষেত্রে বছরের প্রথম ৫টি মাস হবে ৩১দিনে(৩১×৫=১৫৫) বাকি ৭ মাস হবে ৩০ দিনে(৩০×৭=২১০)এই মোট ১৫৫+২১০=৩৬৫ দিন৤ অধি বর্ষে বা লিপ ইয়ারে ৬ষ্ঠ মাস বা জুন মাস হবে ৩১ দিনে৤ সপ্তাহের হিসেবে মাস হবে তিন সপ্তাহে৤ ৩৬.৫ সপ্তাহে হবে বছর, এখন হয় ৫২.১৪৩ সপ্তাহে৤ প্রতি ৫দিন পরে একদিন করে ছুটি থাকবে, ফলে প্রতি সপ্তাহে দু-দিন ছুটি থাকবে৤

দিনের সময় পরিমাপের ক্ষেত্রে ১০০ সেকেন্ডে এক মিনিট, ১০০ মিনিটে এক ঘন্টা, এবং ২০ ঘন্টায় এক দিন৤ এখন এক ঘন্টায় ৩,৬০০ সেকেন্ড, আর দিন হয় ১,৪৪০মিনিটে= ৮৬,৪০০(ছিয়াশি হাজার চারশ) সেকেন্ডে, নতুন ব্যবস্থায় এক ঘন্টা হবে ১০,০০০ সেকেন্ডে, আর দিন হবে ২,০০০ মিনিটে=২,০০,০০০(দু-লক্ষ) সেকেন্ডে৤





নতুন সেকেন্ডের নাম হবে সেন্টি-সেকেন্ড, মিনিট হবে সেন্টি-মিনট৤
বর্তমান অভ্যাস বা ধ্যান ধারণায় তা প্রথম দিকে জোর ধাক্কা দেবে ঠিকই কিন্তু অভ্যাস হয়ে গেলে তখন খুব সুবিধে হবে৤ টাকা পয়সার নতুন মান চালু করার সময়ে, অর্থাৎ ৬৪ পয়সার যায়গায় ১০০ পয়সায় এক টাকা, ৫০ পয়সায় আধুলি, ২৫ পয়সায় সিকি, বেশ খটকার ব্যাপার ছিল৤ তারপরে ছিল না ৪ পয়সায় এক আনা, বরং তখন হিসেব করে দাঁড়িয়েছিল ৬(=৬.২৫)পয়সায় এক আনা, ১৩পয়সায় দু-আনা৤ আবার ২৪ পয়সার যায়গায় ২৫ পয়সায় সিকি বা একটাকার চার ভাগের এক ভাগ৤ অন্তর্বর্তী সময়ের এই সকল গোলযোগ তো কিছু ছিলই, পরে যখন সবটাই দশমিকে পুরো চালু হয়ে গেল তখন টাকা পয়সার হিসেব অনেক সহজ হয়ে গেল৤ আগে সের ছটাক ফুট গজ আর আনা সিকি আধুলি ইত্যাদি নিয়ে হিসেব করতে এক এক জন মানুষকে খুবই হিমসিম খেতে হত৤ কোনও কোনও প্রাচীন সভ্যতায় যেমন সাধারণ সংখ্যা গণনার জন্যই দক্ষ মানুষ তথা পণ্ডিত বা বিজ্ঞানীদের দরকার হত৤ সময়ের ধারণায় পরিবর্তন আনলে প্রথম দিকে তা জনমনে বেশ বড় ধাক্কা দেবে, কিন্তু পরে ব্যাপারটা রপ্ত হয়ে গেলে কিন্তু খুব সুবিধেই হবে৤

সপ্তাহের নতুন তিনটি দিন হতে পারে__ সাগর, চন্দ্র, পৃথিবী৤
--- রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহস্পতি শুক্র শনি সাগর চন্দ্র পৃথিবী ---
সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন, রবি এবং শুক্রবার৤


প্রতি চার দিন পরে পরে ছুটি পেলে লোকে আরাম পাবেন, কাজের একঘেয়েমি কেটে যাবে৤ নিজস্ব ব্যক্তিগত কাজ কর্ম করতেও সুবিধে হবে৤ তখন অফিস বা কর্মক্ষেত্র আর কাঁধের জোয়াল বলে মনে হবে না৤


●[সাগর চন্দ্র পৃথিবী না বলে এটা --
চন্দ্র, পৃথিবী, সাগর এভাবেও হতে পারে]
        -- ০০  --

Wednesday, June 30, 2010

ইউনিকোড ফন্ট ডাউনলোড করুন-- ফ্রি




বাংলা ইউনিকোড ফন্ট ডাউনলোড করার লিংক:

https://sites.google.com/site/ahanlipi/font-download/AhanLipi-Bangla14.zip


ইউনিকোড ফন্ট ডাউনলোড করার লিংক উপরে দেওয়া হল৤

লিংকে ক্লিক করুন ফন্ট ডাউনলোড হবে৤

Saturday, May 29, 2010

নামকথা


নামকথা




সবটা ঠিক ঠিক পড়তে হলে সংগে দেওয়া লিংক থেকে বাংলা ফন্ট ফ্রি ডাউনলোড করে ‎নিতে হবে৤ ‎
বিনামূল্যে বাংলা ইউনিকোড ফন্ট সরাসরি ডাউনলোড করুন নীচের এই লিংকে ক্লিক করে৤

Click on the Link and Download "AhanLipi-Bangla14" Unicode Font

https://sites.google.com/site/ahanlipi/font-download/AhanLipi-Bangla14.zip
=====================================


          নামের জন্য এ জগৎ, নামের জন্য সকল দৌড়ঝাঁপ৤ নাম কিনতে কত কড়ি যে মানুষ ফেলে তার ঠিক কী? অধ্যাপক বলেছিলেন, আমাদের মনের যদি ফোটোগ্রাফ নেওয়া যায়, তবে দেখা যাবে সেখানে কেবল আমি আমি আর আমি৤ এই আমিত্বকে যে ব্যাহত করে বা করবে তার প্রতি আমাদের মনোভাব অপ্রসন্ন হবেই৤
        আমাদের সমাজে আমরা বে-খেয়ালে নারীদের নামের প্রসারে পুরুষরা বিরাট বাধা হই৤ কাগজে দেখলাম, একজন চ্যাটার্জি থেকে আদালতে হলফনামা দিয়ে নাম পালটে ফিরে পিতার পদবি সেনগুপ্ত গ্রহণ করেছেন, কারণ তাঁরা বিবাহবিচ্ছিন্ন হয়েছেন৤


       মানুষের নামকরণ কেমন হওয়া উচিত?
       পুরুষদের নাম হবে পিতৃমুখী, আর নারীর নাম হবে মাতৃমুখী৤


              এভাবে নামকরণ করলে নানা ধরনের সমস্যা কিছুটা কমবে৤ অবশ্য তা সবার মতেই যে কমবে এমন নাও হতে পারে৤ প্রত্যেক কাজের সাধারণত দুটি দিক থাকেই, একটি ভালো দিক, আর অন্যটি এর বিপরীত তথা খারাপ দিক৤ যেমন, একটু মজা করেই বলা যাক-- একজন ট্রেনযাত্রী টিকিট চেকারকে বললেন, আপনারা যদি চুরি না করতেন তা হলে, ট্রেনের লাইন সোনা দিয়ে বাঁধানো যেত৤ শুনে চেকার বললেন, সেই সোনা তো আপনারা চুরি করতেন, ট্রেনের যে লাইনই থাকত না, ট্রেন চলত কী করে!


এসব অবশ্য শোনা পুরোনো গল্প৤ যা হোক, নাম নিয়ে দুচার কথা আলোচনা করা যাক৤


নামকথা
নামের আমি, নামের তুমি, নাম দিয়ে যায় চেনা
মনোজকুমার দ. গিরিশ



         আমাদের বাবা, ঠাকুরদা, তাঁর বাবা, তাঁর বাবা এমনি করেই তো প্রজন্মের গতি চলেছে৤ আমরা আমাদের ক’জন পূর্বপুরুষের নাম জানি? অনেকেই কিছুটা জানি৤ আগে অবশ্য সাত পুরুষের নাম জানা একটা অব্যতিক্রমী অবশ্য-জ্ঞাতব্য বিষয় ছিল৤ পূর্বপুরুষদের নাম না-জানাটা তখন খুব নিন্দনীয় ব্যাপার ছিল৤ সাধারণত বিয়ের আসরে পুরুত যখন মন্ত্র পড়ে বিয়ে দেন, তখন দরকার হয় পূর্বপুরুষদের নাম৤ আগে সাত পুরুষের নাম নাকি দরকার হত৤ এখন আর অত দরকার হয় না, কারণ কেউ আর অত পিছনের মানুষদের নাম মনে রাখার দরকার বোধ করেন না৤ আমি দেখেছিলাম একটি মেয়ে-- শিক্ষিত স্নাতক মেয়ে, তার ঠাকুরদার নাম জানে না৤ তার আগের অর্থাৎ ঠাকুরদার বাবার নাম যদি নাও জানে, নিজের ঠাকুরদার নাম অবশ্যই তার জানা উচিত ছিল৤


      যদি তার বাবার নাম হয় ক, আর তার ঠাকুরদার নাম হয় খ, এবং তার ঠাকুরদার বাবার নাম হয় গ, তবে তার বাবার নামকরণ ‘কখগ’ হলে মেয়েটি তার বাবার নামের মধ্যেই তিন পুরুষের নাম জেনে যেত৤ আলাদা কোনও উদ্যোগ লাগত না৤
      যদি তার বাবার নাম হয় সমীরণচন্দ্র মুখোপাধ্যায় তবে পাওয়া যায়, তার বাবার নামটুকু এবং তাঁর ধর্মীয় জাতি পরিচয়৤ এতে নামের সামাজিক বিস্তার না কমলেও, প্রজন্ম পরম্পরাগত ধারা ছিন্ন হয়৤ মানুষ তো আর ভুঁইফোড় নয়৤ তাছাড়া সমীরণচন্দ্র মুখোপাধ্যায় নামের অন্য লোক থাকা খুবই সম্ভব৤ বাংলায় আছে প্রায় দেড় লক্ষ শব্দ, তার মধ্যে দন্ত্য-স দিয়ে শুরু শব্দের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি, অর্থাৎ স-দিয়ে শুরু নামও অনেক বেশি, তাই এমনি স-দিয়ে শুরু শব্দের নাম যাদের, তাঁদের নাম নিয়ে কিছু অতিরিক্ত সমস্যা হয়ই৤ একই পাড়ায় দুজন সমীরণ থাকা বিচিত্র নয়, এক মহল্লায়, বা একই এলাকায় একাধিক সমীরণ পাওয়া কঠিন নয়৤ তাই কোন্ সমীরণ তা বিশেষ করে চিহ্নিত করার জন্য পুব পাড়ার সমীরণ, লম্বা সমীরণ, রেলে চাকরি করে যে সমীরণ, এভাবে চিহ্নিত করার দরকার হয়৤ শুধু একটা শব্দ দিয়ে নামকরণ হলে, একই নামের বহু ব্যক্তি পাওয়া যাবে৤ দুটি শব্দ দিয়ে নামকরণ হলে একই নামে একাধিক ব্যক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়, আর তিনটি শব্দ দিয়ে নামকরণ হলে একই নামে একাধিক ব্যক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কমে যাবে৤


       যদি ‘সমীরণচন্দ্র প্রভাতকুমার আনন্দমোহন’, বলে উদ্দিষ্ট সমীরণচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের নামকরণ হত, তবে এই নাম দ্বিতীয়টি আর পাওয়া যেত না, অন্তত পাওয়ার সম্ভাবনা অতি বিরল৤ আর এতে সমীরণচন্দ্রের নামের মধ্যে তাঁর বাবা, এবং ঠাকুরদার নাম থাকায় সমীরণচন্দ্রের সন্তানদের আর তাদের ঠাকুরদা এবং ঠাকুরদার বাবার নাম আলাদা করে শেখার দরকার হত না৤ সমীরণচন্দ্রের পুত্রের নাম যদি হয় বিজনকুমার, এবং তার যদি দ্বিতীয় পূর্ব পুরুষের(ঠাকুরদার) নাম মনে থাকে, তবে ঠাকুরদার নামের সুবাদে অনেক প্রাচীন পূর্বপুরুষকে সে সহজে মনে রাখতে পারবে৤ যথাক্রমে ঠাকুরদা, ঠাকুরদার বাবা, এবং তাঁরও বাবা কে ছিলেন তা এই নামকরণের দৌলতেই জানা থাকবে৤


         সমীরণচন্দ্রের পুত্র বিজনকুমারের পুরো নাম হবে ‘বিজনকুমার সমীরণচন্দ্র প্রভাতকুমার’, সংক্ষেপে বিজনকুমার স. প্রভাত, তথা বি. স. প্রভাত৤ এ নামটি বাঙালির নাম কিনা তা বুঝতে পারা অবশ্য কঠিন হবে৤ গুহ, নস্কর, মুখোপাধ্যায়, দাস, চক্রবর্তী, সাঁতরা, ঘোষ, মৌলিক-- এসব নাহলে আমরা তো তাকে সহজে বাঙালি বলে চিনতে পারব না৤ মুসলিমদের ক্ষেত্রে অবশ্য কেবল নাম শুনে এখনও বলা কঠিন যে এই নামটি কোনও বাঙালির নাম কিনা? তৈরুম খান, বা এনামুল কবীর, কিংবা জাহিরুল হাসান নামগুলো বাঙালি নাম কি? আমার পরিচিত বলে আমি জানি এঁরা খাঁটি বাঙালি, অন্যথা জানার কী উপায়?


        কারও নাম যদি হয় কালী, রাম, কৃষ্ণ, ইন্দ্র, দুর্গা তবে মানুষ তার মধ্যে স্পষ্ট ধর্মীয় চিহ্ন দেখতে পান, কিন্তু যদি নাম হয়-- আকাশ, বাতাস, নদী, জল, বৃষ্টি, রোদ, আশা, আনন্দ, নিদ্রা, ফুল, বিলাস, ভাবনা, দেখা, কৌতুক, চমক, মেঘ, বিদ্যুৎ , উচ্ছ্বাস, রক্তিম ইত্যাদি তবে নামের মধ্যে কোনও ধর্মীয় প্রকাশ থাকে না৤ আজকাল দেখা যায় বাংলাদেশের অনেকের নাম এমনিভাবে রাখা হয়, এটা সুলক্ষণ৤ সাধারণত মুসলমানদের বেশি ধর্মভীরু মনে করা হয়, কিন্তু দেখা যাচ্ছে তাঁরাই নিজেদের নামের মধ্যে ক্রমে ধর্মীয় প্রভাব কাটিয়ে উঠছেন৤ আচরণে ধর্ম থাক, নামে কেন তা থাকতে হবে? রোজা, মন্দির, মসজিদ, উপোস, নামাজ, মানত, কমিনিয়ন, দরগা, পীর, দন্ডি ইত্যাদি থাক ব্যক্তির নিজ নিজ আচরণে, তা টেনে নামের মধ্যেও আনার দরকার নেই৤ নিজ নামের মধ্যে ধর্মীয় পরিচয় প্রদর্শন করা খুব জরুরি নয়৤ দাদু মনে করেন নাতির নাম কালীকৃষ্ণ রাখলে নাতিকে ডাকতে গেলে অনেকবার কালী এবং কৃষ্ণকে ডাকা হবে, এতে অনেক পুণ্য৤ কালী এবং কৃষ্ণ নাম নিলে যদি পুণ্যই হয়, তবে কৌশলী ফাঁকি দিয়ে সেটা হতে পারে না৤ ভক্তিভরে কালী এবং কৃষ্ণকে ডাকতে হবে৤ ফাউ বেগুনের মতো ফাউ পুণ্য হয় না৤ ঈশ্বরকে ফাঁকি দিয়ে পুণ্যলাভের চেষ্টায় আত্মপ্রতারণাও থাকে অনেকটা৤


           পুরুষদের নাম যেমন পিতৃমুখী বোঝা গেল, মেয়েদের নাম কেমন করে মাতৃমুখী হবে? সমীরণচন্দ্রের কন্যা পরি, সে কি পরি মুখোপাধ্যায় হবে না? যদি না হয়, তবে সে নাম কী হবে?
নারীমুক্তি নিয়ে অনেক আন্দোলন হয়, হচ্ছে৤ নারীর নিজস্ব পরিচয় নিয়েও ভাবা দরকার৤ একটি দম্পতির সন্তান কেবলই কি তারা পুরুষের সন্তান? যদি সঠিকভাবে দেখা হয়, তবে তা যে হতে পারে না, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না৤ সন্তানে নারী পুরুষ উভয়েরই সমান অংশ৤ বরং নারীর অংশই বেশি৤ অনেকটাই বেশি৤ সন্তানের সকল কষ্ট যন্ত্রণাই নারীকে বইতে হয়৤ ভূমিষ্ঠ হবার পরে যতটা, ভূমিষ্ঠ হবার আগে তার চেয়েও অনেক অনেক বেশি-- পুরোটাই৤ যদি পুরুষকে সন্তান ধারণের সুযোগ দেওয়া যায়, তবে কোনও পুরুষ কি সন্তান ধারণে রাজি হবেন?


          পুরুষ নারীকে সুরক্ষা দেয়, কিন্তু পুরুষ নারীকে তাঁর আত্মপরিচয়ের ব্যাপারে কোনও সাহায্য কি করে? সুযোগ কি দেয়? দেখে বরং মনে হবে সন্তান যেন পুরুষের নিজের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পত্তি, ঠিক যেন জায়গা জমির মতো, অথবা জমানো অর্থ তথা ব্যাংক ব্যালান্স৤ যদিও আমাদের দেশে মেয়েদের অন্তত সম্পদ মনে করা হয় না, মনে করা হয় বিপদ৤ কারণ মেয়েকে বিয়ে দিতে হবে, তার ভরণপোষণ রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে, ছেলেদের ক্ষেত্রে সে সমস্যা অনেক অনেক কম৤ এসব ব্যাপার অনেকটা সামাজিক গঠন ও ধ্যানধারণার উপরে নির্ভরশীল৤ সকল দেশে আমাদের দেশের মতো নারীকে দেখা হয় না৤ কোথাও আরও ভালো চোখে দেখা হয়, আবার কোথাও অনেক-বেশি খারাপ চোখে দেখা হয়৤ সেটা সামজিক সেট-আপ বা সমাজের গড়নের উপরে গড়িয়ে চলে৤ ধর্মীয় ব্যাপার স্যাপারও ‌অবশ্য সেখানে বিরাট ভূমিকায় অবতীর্ণ৤ পান থেকে চুন খসার রীতি কী হবে তা ধর্মীয় অভিভাবকেরা নির্ধারণ করে থাকেন৤


         নারীকে যদি তাঁর আত্ম পরিচয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে হয়, বা নারী যদি নিজেকে আত্মপ্রতিষ্ঠিত করতে চায় তবে, নারীর নাম হবে মাতৃমুখী৤ সমীরণচন্দ্রের কন্যা-- পরি কী নামে পরিচিত হবে? তার মায়ের নাম হল বিনতা৤ তাহলে পরির নাম হবে-- পরি বিনতা৤ তবে এখানে থামলে চলবে না৤ পরির মা বিনতা, আর বিনতার মা হলেন সুলেখা৤ তাই পরির পুরো নাম হবে-- পরি বিনতা সুলেখাপরির নামের সঙ্গে তার ঠাকুরমার নাম জুড়বে না জুড়বে তার মায়ের-মা, তথা দিদিমার নাম৤ পুরুষেরা যেমন পূর্ব পুরুষদের ধারা বজায় রাখছেন, নারীরা তেমনি নারীধারা বজায় রাখবেন, পূর্বসূরি নারীদের ধারা৤ মা-- মায়ের মা-- তাঁর মা-- তাঁরও মা, এমনিভাবে তা এগিয়ে চলবে৤ এতে সকল নারীই সমভাবে বিবেচিত হবেন৤ পরির ঠাকুরমার নাম যদি হয় কমলা, তবে কমলার মেয়ে কমলারই নাম পাবে৤ যেমন, বাসবী-কমলা-নন্দাপরির পিসি(বাবা সমীরণচন্দ্রের বোন) হলেন বাসবী, পরির ঠাকুর মা হলেন কমলা(অর্থাৎ পিসি বাসবীর মা), আর ঠাকুরমা তথা কমলার মা হলেন নন্দা(বাসবীর দিদিমা)৤ অর্থাৎ বাসবী--বাসবীর মা(কমলা)-- বাসবীর মায়ের মা(দিদিমা, নন্দা), বাসবী-কমলা-নন্দা৤ এখানেও মাতৃধারা বজায় থাকবে৤ যে মায়ের গর্ভে যার জন্ম সে পাবে তার মায়ের নাম৤ পরির বাবার মা তথা ঠাকুরমা(কমলা) যেহেতু পরির মায়ের(বিনতা) জন্মদাত্রী নন(তিনি শাশুড়ি) তাই, পরি তার ঠাকুরমার নাম পাবে না৤ পাবে মায়ের জন্মদাত্রী তথা দিদিমা(সুলেখা)-র নাম৤


       এভাবে তিন প্রজন্মের নাম পর পর জুড়ে হবে ব্যক্তিনাম৤ তা পুরুষের নাম হোক বা নারীর নাম, যার নাম-ই হোক৤ তবে মানুষের নামকরণ অবশ্যই পুরুষ নারী--- পু-না(Gender জেন্ডার), লিঙ্গভেদ অনুযায়ী হবে, সে ব্যাপারে কোনওই দ্বিমত নেই৤






          দেখা যায় সামাজিক নানা কারণে মেয়ের চেয়ে লোকে ছেলেই বেশি চান৤ এক্ষেত্রে নারী অন্তত মনে মনে চাইবেন তাঁর কন্যা হোক, তাঁর নিজ পরিচয়ের ধারা বয়ে চলুক ফল্গু ধারার মতো৤
নামের মধ্যে মানুষের আত্মপরিচয় লুকানো থাকে, অহংবোধও সুপ্ত থাকে৤ নামের জন্য মানুষ কী না করতে চায়, বা কী না করতে পারে? সেই নাম পরিচয় থেকে মেয়েরা আসলে বঞ্চিত হয়েই আছে৤ তাঁদের এবার নিজ নামের সুবিধা দিতে হবে৤ প্রজন্মের ধারা কেবল পুরুষেরা বহন করবেন, নারী তা করবেন না, এমন হওয়া ঠিক নয় তাই নারী নাম হবে মাতৃমুখী৤


         একজন কৃতী মেয়ে কম বয়সে বিখ্যাত হয়ে পড়ল৤ তার নাম ছড়িয়ে পড়ল চারিদিকে৤ সবাই তাকে এক ডাকে চেনে অমুক বন্দ্যোপাধ্যায়৤ কিছুদিন পরে তার বিয়ে হল৤ অমনি সঙ্গে সঙ্গে কেবল গোত্র নয়, তার নামের পদবিও পালটে গেল৤ সে হল অমুক মুখার্জি৤ লোকে তখন আর ঠিক ঠাহর করতে পারে না, কে এই সহসা নবীনা? আসলে সে যে সহসা নবীনা নয়, বহু পরিচিত তা লোককে বোঝাতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হবে৤ কিন্তু বিয়ের পরে যদি তার নাম পালটাতে না হয়, তবে এই সমস্যা থাকে না৤ এজন্য নাম হতে হবে মাতৃমুখী৤ মাতৃমুখী নাম চিরকাল একই থাকবে, সেখানে আলাদা করে পদবি জুড়বার কোনও ব্যবস্থা বা জায়গা নেই, জন্মের সময়ে যে নাম হবে, সেই একই নাম চিরকাল থাকবে, পুরুষদের যেমন শৈশবের নাম চিরকাল একই থেকে যায়৤ বিয়ের আগে অর্জিত ডিগ্রি, সম্পত্তি বা অন্য কোনও ব্যপারে, বিয়ের পরে নাম পালটাবার যে সমস্যা, তা কিন্তু মাতৃমুখী নামে হবে না৤ ধরি ডিগ্রি, ডিপ্লোমা, ব্যাংক একাউন্ট, জমির দলিল, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড, রেশন কার্ড বা এধরনের পরিচিতির সামনে পড়ে মাতৃমুখী নামকে পর্যুদস্ত হতে হবে না৤ পুরুষদের এসব বিদঘুটে সমস্যায় পড়তে হয় না৤
           আর একটা ব্যাপার হল, যাঁরা সমাজের তথাকথিত উঁচু স্তরে অবস্থান করেন তাঁরা এই ধরণের নামকরণে খুশি হবেন না, কারণ তাতে তাঁদের নামের যে মহানত্ব তা প্রাকশ করার ব্যবস্থা এতে থাকে না৤ আবার অন্যদিকে যাঁদের নামের শেষের পদবি একটা ভার বা বোঝা বিশেষ, তাঁরা এই নতুন মাতৃমুখী ও পিতৃমুখী নামকরণে হাঁফ ছেড়ে বাঁচবেন৤ কারণ তাঁদের তো হারাবার কিছু নেই, বরং পাবার আছে মান৤ নতুন নাম-ব্যবস্থায় তাঁদের নামের (পদবির)জন্য আর নিত্য বিড়ম্বিত হতে হবে না৤ এখানে বন্দ্যোপাধ্যায়েরও যে প্রকৃতির নাম হবে, নস্করেরও সেই একই প্রকৃতির নাম হবে, দাস বা বাউড়িরও সেই একই নিদান৤ আর দেশে এই অবদমিত নামপদবির মানুষই তো সংখ্যাগরিষ্ঠ৤ তাই এটা মানুষকে বৃহদংশে মুক্তি দেবে, শুধু নারী নয়, মুক্তির স্বাদ আরও অনেক বেশি মানুষ পাবেন৤ নারী যদি ৫০%শতাংশ হন, আর বাকি পঞ্চাশ শতাংশের মধ্যে ৩০-৪০%শতাংশই তো নতুন সুবিধাভোগী হবেন, অর্থাৎ একুনে ৮০-৯০ শতাংশ৤ জাতিপরিচয়ে হিন্দুসমাজে ব্রাহ্মণ সবচেয়ে বড়৤ কিন্তু অপরিচিত ব্রাহ্মণ-পদবিধারীদেরও লোকসমাজে বিব্রত হতে হয়৤ যেমন ব্রাহ্মণ পদবি-- চিতলে, বলোৎকটা, ধামাইতকন্নি৤
         এক সুন্দর তরুণ মুসলিম যুবকের সঙ্গে এক মুখার্জি কন্যার বিয়ে হল৤ দুঃখজনকভাবে কিছুকাল পরে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়৤ দুঃখজনক হলেও ঘটনা এমনিই৤ এ ক্ষেত্রে মেয়েটির নাম পদবী নিয়ে যে সংকট তার কী হবে? 

         গণতন্ত্রের তো এটাই রীতি যে বেশি মানুষ সুবিধা পান৤ সুবিধা পান যাঁরা বেটারহাফ তাঁরাও, তাঁরা তো আজন্মকাল তা পান নি৤


         মেয়েরা যেন পদ্মপাত্রে জল, সদাই করছে টলমল৤ প্রাক বিবাহে এক নাম আর পদবি, বিয়ের পরে অন্য পদবি, বিবাহ বিচ্ছিন্ন হলে ফের পিতার পদবি, পুনর্বিবাহে নতুন পদবি৤ নারী যখন যে পাত্রে থাকে, তখন সে সেই রূপ ধরে৤ এজন্যই কি বিবাহের “পাত্র” চাই?


         এসব কথার অর্থ কিন্তু নারীকে সমাজ-বিদ্রোহের ইন্ধন যোগানো নয়, বরং আত্মবিকাশের দিকে সহায়তার হাত প্রসারিত করা৤ এতকাল সেটা হয়নি, সেটা এবার হোক৤ নারী হোন পুরুষের প্রকৃত সমকক্ষ-- যেন তাঁকে গলগ্রহ হয়ে থাকতে না হয়৤ পুরুষের মতো নারীও একই কক্ষে বিচরণ করুন-- একই লক্ষ্যে৤ বিপরীতমুখী হলে সংঘর্ষ ঘটবে যে৤ তাতে হবে সমাজের অকারণ শক্তি ক্ষয়৤


নিবন্ধ লেখক-- মনোজকুমার দীনেশচন্দ্র গিরিশচন্দ্র
মনোজকুমার দ. গিরিশ৤
ম. দ. গিরিশ




সর্বশেষ পরিমার্জন  ০৫/১২/২০১৬





Tuesday, April 20, 2010

বই প্রকাশ-- বাংলা নববর্ষ৤ ১ বৈশাখ, ১৪১৭


বিনামূল্যে বাংলা ইউনিকোড ফন্ট সরাসরি ডাউনলোড করুন নীচের এই লিংকে ক্লিক করে৤

https://sites.google.com/site/ahanlipi/font-download/AhanLipi-Bangla14.zip

===================================



বাংলা নববর্ষ

১ বৈশাখ ১৪১৭

১৫/০৪/২০১০ বৃহস্পতিবার

শিশুদের হরফ পরিচয়ের বই “বাংলা বর্ণমালা”
প্রকাশিত হল৤ বইখানিতে কেবলমাত্র অ আ ক খ
আছে, প্রতি পৃষ্ঠায় একটি করে হরফ৤ পৃষ্ঠাসংখ্যা ৫২, মোটা আর্ট পেপারে ছাপানো৤ বইখানির প্রচ্ছদ, এবং দ্বিতীয়, তৃতীয় ও পিছনের মলাটের ছবি তুলে ধরা হল:-

বইয়ের প্রচ্ছদ






দ্বিতীয় মলাটের ছবি





তৃতীয় মলাটের ছবি





চতুর্থ মলাটের ছবি





‎==================================‎

বাংলা বর্ণমালা
শিশুদের হরফপরিচয়ের এই বইখানি দেখা যাবে ‎‎বাংলামগ্ন ব্লগে৤ এপ্রিল ২০১০৤ ‎‎(Blog Archive 2010, April)‎


‎==================================‎

বাংলা বর্ণমালা

"লেখাপড়া"-- বাংলা শিক্ষার প্রাথমিক ‎বইখানিতে প্রাথমিক শিক্ষার সম্পূর্ণ পাঠ পাওয়া যাবে৤ আপলোড করা আছে ‎‎বাংলাবিশ্ব ব্লগে৤ মোট চারটি খণ্ডে ‎বিভক্ত৤ নভেম্বর ২০০৮(প্রথম খণ্ড), ডিসেম্বর ২০০৮(দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ‎খণ্ড)৤ ‎


‎==================================‎